তপু রায়হান রাব্বি ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগে ২০২৩ সালে ডাক্তার সংকট থাকার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় ইমারজেন্সি ও আউটডোরে(বহির্বিভাগ) এবং কি ভর্তি সহ মোটচিকিৎসা সেবা নিয়েছেন প্রায় তিন লাখ রোগী। রোগীর সংখ্যা বেশি থাকায় সরকারি ঔষধ মাস শেষে পরে সংকটে।এছাড়াও অত্র হাসপাতালের অসংখ্য রোগী রেফার করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইমার্জেন্সিতে ৫৪ হাজার ৩৯২ জন ও আউটডোরে (বহির্বিভাগ) ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫৮ জন এবং ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৯ হাজার ৪১৩ জন। মোট চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬৩ জন। এছাড়াও নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ২ হাজার ২৬৬ জনের। সিজার হয়েছে ৩৪ জনের। এছাড়াও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছেন অসংখ্য রোগীকে। তবে রোগীর পরিমাণে নেই সরকারি ঔষধ। যে কারণে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনদেরকে বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে চওড়া দামে। জনগণ জানান, ফুলপুর ও তারাকান্দা একসাথে থাকাকালীন সময় অত্র হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৩ সালে এবং ২০০৯ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। তবে ভৌগলিক কারণ ও চিকিৎসা সুবিধায় ফুলপুর ও তারাকান্দাসহ পার্শ্ববর্তি হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও নকলা উপজেলার আংশিক এলাকার রোগীরা ফুলপুর হাসপাতালে এসে থাকেন। ফলে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে প্রতিনিয়ত দু’ থেকে তিন গুণের বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের সিট না পেয়ে বেশির ভাগ রোগীকে ভিতর ও বারান্দার বাহিরের ফ্লোরে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তবে হাসপাতালটি আরো অনেক আগেই ১০০ শয্যা করার দরকার ছিল। এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন সহস্রাধিক রোগী এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইমারজেন্সিতেও ২৪ ঘন্টা রোগী লেগেই থাকছে। ফলে সব সময়ই হাসপাতালকে রোগীর ভাড়ে ভারাক্রান্ত থাকতে হচ্ছে। হাসপাতালে একটি ব্লাড ব্যাংক এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তাক্ওয়া অসহায় সেবা সংস্থা ও স্বেচ্ছায় রক্তদানে আমরা ফুলপুরবাসী সহ কয়েকটি সংগঠন রোগীদের ব্লাড মেনেছ করে দেন। তবে তারা মেনেছ করতে না পারলে অনেক সময় ব্লাডের জন্য রোগীদের পরতে হয় মহাবিপদের মুখে বা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।ডাক্তার সংকট থাকায় আলট্রাসনোগ্রাম সপ্তাহে ৪দিন। ই.সি.জি. ২৪ ঘন্টা। ডিজিটাল এক্সরেসহ প্যাথলজির অনেক টেস্ট এখন হাসপাতালেই করা হয়। তবে অনেক সময় বিভিন্ন বিভাগের ডাক্তার পাওয়া যায় না ? পরে আশ্রয় নিতে হয় বাহিরের প্রাইভেট ডাক্তারের কাছে। সেখানেও আবার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয় হাসপাতালের চেয়েও অতিরিক্ত অর্থায়নে।একটি এ্যাম্বুলেন্স সচল থাকলেও আরো দুইটি এ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অকেজো অবস্থায় পড়ে থেকে ধ্বংস হচ্ছে। ফুলপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর সংবাদকর্মী মোঃ তপু রায়হান রাব্বিকে জানান, অত্র হাসপাতালে ভর্তি রোগীর পরিমাণ প্রায় সব সময় দুই গুণের বেশি থাকে। রোগীর পরিমাণ বেশি থাকাই হাসপাতালের সরকারি অনেক ঔষধ সময়সীমার আগেই স্টর্ক ফুরিয়ে যায়। তবে হাসপাতালের সকল সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। অনেক ডাক্তার সংকটও রয়েছে। কনসালটেন্ট পোস্টের ১০জন এর মধ্যে আছে আটজন। চক্ষু ও চর্ম কনসালটেন্ট নেই। মেডিকেল অফিসার পোস্ট ১৯ জন এর মধ্যে আছে ১৭ জন ডাক্তার । দন্ত ডাক্তার নেই, এনিস্থিসিয়া মেডিকেল অফিসার নেই, এর মধ্যেও সংযুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আছেন একজন। তবে মার্চ মাসে চলে যাবে আরো তিনজন কোর্স এ। তখন চিকিৎসা সেবা দিতে আরো হিমসিম খেতে হবে ডাক্তারদের। অত্র হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংক ও ডাক্তার আনার জন্যও আবেদন করেছি।