মোহাম্মদ আবুল হাশেম , বান্দরবান। টানা তিনদিন ভারি প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবান জেলা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর পানি। বেশ কয়েকটি জায়গায় পাহাড় ধসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তুমব্রু এলাকায় খালের প্রবল স্রোতে পাঁচ বছরের একটি শিশু তলিয়ে গেলও এখনও তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাহাড়ি ঢলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু খালের পানিতে তলিয়ে গেছে তুমব্রু বাজার। এছাড়া ঘুমধুম এলাকায় শতাধিক বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রায় দুশো পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ওই এলাকায়। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ইউএনও মো. জাকারিয়া জানিয়েছেন, ঘুমধুম-তুমব্রু এলাকায় দু’শতাধিক পরিবার পানিবন্দী। অনেকে স্কুলসহ নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। ওই এলাকায় কয়েকটি সড়ক তলিয়ে গেছে। ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় থানচি-বান্দরবান সড়কের ৪৮ কিলো এলাকায় রাস্তার ওপর পাহাড় ধসে পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে থানচি সড়কের জীবন নগর এলাকায় পাহাড়ের বিশাল একটি অংশ সড়কের ওপর ধসে পড়ে। এতে বান্দরবানের সাথে থানচির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা থেকে ধসে পড়া মাটি অপসারণে কাজ করছে। অন্যদিকে, লামার নিম্নাঞ্চলে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। এতে পৌরসভার নয়াপাড়া, বাজার পাড়া, হাইস্কুল এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং সন্ধ্যা নাগাদ কোড়ালিয়ারটেক অজ্ঞাত এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দি জানান, পাহাড় ধস হওয়ায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় তারা কাজ করছেন। দ্রুত সময়ে মাটি অপসারণ করা হলে যোগাযোগ স্বাভাবিক হবে। এদিকে, প্রবল বর্ষণের কারণে বান্দরবানের বেশ কয়েকটি জায়গায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটলেও এখনও কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। পাহাড়ধসে প্রাণহানি ঠেকাতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরে যেতে প্রশাসন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে থানচি সড়কে পাহাড় ধসে যোগাযোগ আপাতত বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নিচু এলাকায় পানি উঠলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।