মোহাম্মদ আবুল হাশেম জেলা প্রতিনিধি: বান্দরবানের লামায় পরকীয়া প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামী মো. সুজন হোসেনকে (২৮) পরিকল্পিত হত্যার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ০১ আগস্ট থেকে পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন: ১। হানিফ (৩০) পিতা. মোহাম্মদ আলী, দক্ষিন ছালামি পাড়া ৩ নং ওয়ার্ড নাইক্ষংছড়ি, বান্দরবান। (বর্তমান চকরিয়া ফায়ার সার্ভিস মসজিদের সামনে বাসা বাড়ির ভাড়াটিয়া) ২। নুর বানু (২৮) স্মামী. সুজন হোসেন, ভিকটিমের স্ত্রী। সাবেক বিলছড়ি পৌর ৬নং ওয়ার্ড লামা বান্দরবান। এর আগে নিখোঁজের দুইদিন পর ২৩ জুলাই সকাল ১১ টার দিকে সদর ইউপির মেরাখোলা মাতামুহুরি নদী থেকে নিহত সুজনের লাশ গলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সে উপজেলার পৌর নয়া পাড়া ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। বিয়ের পর থেকে স্ত্রী নিয়ে শাশুড় বাড়ীতে থাকতেন সুজন। ঘটনার বিবরণে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুজন ও নূর বানুর সংসারে ১১ বছরের এক ছেলে ও ৩বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের সুনির্দিষ্ট আয় ছিল না থাকায় স্ত্রী এবং শাশুড়ির আয়ে সংসার চলতো। ভিকটিম বিভিন্ন মেয়েদের সাথে সম্পর্কে জড়ালে তারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় মনোমালিন্য হতো। ঘটনার কয়েকদিন আগে টাকার জন্য ভিকটিম তার স্ত্রীকে ব্যাপক মারধর করে। একপর্যায়ে ২নং আসামী ভিকটিমের উপর চরম ক্ষুব্ধ হয়। এদিকে বিগত ৩মাস আগে ভিকটিমের স্ত্রী বান্দরবান সদরে যাওয়ার সময় ১নং আসামী পূরবী গাড়ীর হেল্পার হানিফের সাথে পরিচয়ের সুবাদে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে উভয়ে মিলে যাদু-টোনা করে ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেও ব্যর্থ হয়ে ১নং আসামী চকরিয়া থেকে লামা আসেন সুজনকে হত্যার উদ্দেশ্যে। পরে ২নং আসামী পরিকল্পিত প্লেন অনুসারে গত (২১ জুলাই) রাতে ৩টি ঘুমের ঔষুধ খাইয়ে দিলে ওষুধের প্রভাবে ভিকটিম ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ১১টার পর ১নং আসামী ঘরে প্রবেশ করেন। ২ নং আসামি গামছা দিয়ে ঘুমন্ত ভিকটিমের পা বেঁধে ফেলে। ১ নং আসামী কম্বল দিয়ে নাক মুখ চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পায়ের বাঁধন খুলে গেলে ১নং আসামি ভিকটিমের নাকে মুখে কিল ঘুসি মারে এবং গামছা দিয়ে গলায় পেচিয়ে ধরে। একই সাথে ২নং আসামী ভিকটিমের অন্ডকোষ চেপে ধরায় কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিকটিমের দেহ নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে রাত ২ঘটিকার সময় আসামীরা কাঁধে করে ভিক্টিমের লাশ নিকটস্থ ঝিরিতে ফেলে দিলে পানির স্রোতে লাশ মাতামুহুরী নদীতে চলে যায়। এ ঘটনায় নিহত সুজনের ভাই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে লামা থানায় মামলা করেন। এবিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিম শেখ বলেন, মামলার পর পুলিশ ঘাতক স্ত্রী ও তার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উভয়ে হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।