1. [email protected] : adminbackup :
  2. [email protected] : Gk Russel : Gk Russel
  3. [email protected] : stnews :
"রাতে পড়া, দিনে চা বিক্রি "চলছে পিন্টুর জীবন যুদ্ধ - শিক্ষা তথ্য
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শ্যামনগর উপজেলা অধিপরামর্শ ফোরামের আয়োজনে অর্ধবার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত ঢাকায় শিক্ষক সমাবেশে আহত, আইসিউতে লড়াই শেষে শিক্ষিকা ফাতেমার করুণ মৃত্যু নারায়ণগঞ্জে বিদায় ডিসিকে ফুলের শুভেচ্ছা জানালেন না,গঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বন্দর থানা সেলুন মালিক  ইউনিটি ৩১ সদস্য  বিশিষ্ট কমিটি গঠন  কলাপাড়া উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী লিমিটেড’র ২১ তম বার্ষিক সাধারণ সভা রূপগঞ্জ পূর্বাচলে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার এর সংঘর্ষে আহত-২ রূপগঞ্জে ‎গোলাম ফারুক খোকনকে বিএসটিএমপিআইএ’র সভাপতি নির্বাচিত রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের বার্ষিক আনন্দভ্রমণ অনুষ্ঠিত নান্দাইল মডেল থানার সামনে অপরিকল্পিত ময়লার ভাগাড় যাতায়াতে অতিষ্ট জনজীবন মধ্য নরসিংপুরে ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত

“রাতে পড়া, দিনে চা বিক্রি “চলছে পিন্টুর জীবন যুদ্ধ

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ১৭৭ Time View

আসিফ জামান , ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : রাতে পড়া, দিনে চা বিক্রি মুখরোচক খাবার বিক্রি করেই চলে পিন্টুর লেখাপড়া। ছোট্র একটি ভ্যানগাড়ি নিয়ে ঠাকুরগাঁও বড়মাঠের শহিদ মিনারের দক্ষিণ পাশে মুখরোচক খাবারের পসরা নিয়ে বসেছে আঠারো বছর বয়সী এক তরুণ ও এক বৃদ্ধ। ভ্যানগাড়ির চারপাশে রঙ্গিন পেপারে বড় বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে বিভিন্ন খাবারের মূল্য তালিকা। সেও মনের আনন্দে ক্রেতাদের মাঝে খাবার বিতরণ করছেন। কাছে গিয়ে নাম জিজ্ঞাসা করতে বলে ওঠেন তাঁর নাম নাসির উদ্দীন পিন্টু। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোচিং করছে। পাশাপাশি চায়ের দোকান। দিনের মধ্যভাগে চা বিক্রি করে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই তাঁর লেখাপড়ার খরচ ও বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবাকে পাঠায়। পিন্টুর সঙ্গে কথা বলতে বলতে মনে হলো, মানুষ শুধু মুখেই বলে, কোনো কাজেই ছোট করে দেখা ঠিক নয়। কিন্তু কেউ কেউ তা করে দেখায়। এই করে দেখানো মানুষদের একজন নাসির উদ্দীন পিন্টু। নাসির উদ্দীন পিন্টুর বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। বাবা আবুল হোসেন দিনমুজুরের কাজ করেন আর মা নাজমা বেগম বাড়িতেই থাকেন। দুই ভাই-বোনের মধ্যে পিন্টু ছোট। বোনের বিয়ে হয়েছে অনেক আগেই। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান পিন্টু কোনমতো এসএসসি পাশ করেছেন স্থানীয় এক হাইস্কুল থেকে। অভাবের সংসারে মাঝেমধ্যে বাবার সঙ্গেও কাজে বের হন সে। কোনমতো খেয়ে দিন পার করতেন তিন সদস্যের এই পরিবারটি। ম্যাট্রিক পরিক্ষায় ভালো ফলাফল করায় মা-বাবার স্বপ্ন পূরণে গ্রাম থেকে শহরে পারি জমান। ওঠেন পৌরশহরের গোয়ালপাড়া এলাকার বন্ধন নামে একটি মেসে। ভর্তি হন শহরের একটি কলেজে। গত বছর এইচএসসি পরিক্ষায় অংশ নেন। ফলাফলও ভালো করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধে কোচিং করছেন। কিন্তু পরিবার থেকে পিন্টুর লেখাপড়ার খরচ চালানো সম্ভব নই বলে সাফ জানিয়ে দেন তাঁর বাবা। অভাব-অনটনের কারণে একবার ভেবেছিলেন, পড়াশোনা ছেড়ে দেবেন। পিন্টু ভাবলেন, না, যেভাবেই হোক টিকে থাকতে হবে! শেষ করতে হবে পড়াশোনা। তখন চিন্তা করে বের করলেন, তিনি মোটামুটি চা বানাতে পারেন। তাই অন্যের অধীনে পরাধীন ভাবে কাজ না করে সিন্ধান্ত নেন চা ও ডালপুরি বিক্রি করে লেখাপড়ার খরচ জোগাবেন। বাবার স্বল্প আয়ে সংসারে। বন্ধুদের অনুপ্রেরণায় চায়ের দোকান দিয়েই জীবন বদলানোর স্বপ্ন দেখেন পিন্টু। ধার-দেনা করে একটি ভ্যানগাড়ি ও দোকানের কিছু সরঞ্জাম ক্রয় করে যাত্রা শুরু করেন তাঁর ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকানের। দোকানের নাম দেন পিন্টু ফুড় কর্নার। প্রথম দিন তাঁকে দেখে বন্ধু,পরিচিতজনেরা অবাক হয়েছিলেন। নানা জন নানা কথা বলেছিলেন। চা বিক্রি না করে কারও সহায়তা নেওয়ারও পরামর্শ দিলেন কেউ কেউ। কিন্তু সাহায্য চাওয়ার চেয়ে কাজটাকেই তিনি বেশি গুরুত্ব হিসেবে নিলেন। পড়াশোনার খরচ জোগাতে প্রতিদিন বিকেল ৩ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভ্যানে করে ডাল পুরি, বরা ও চা বিক্রি করে। ভ্রাম্যমাণ চায়ের দোকান থেকে উপার্জন হয় তা দিয়েই চলে পিন্টু ও তাঁর পরিবার। তাঁর চায়ের দোকানের আরেক সঙ্গী ঝড়ু মিয়া। এই বৃদ্ধই তাকে বিকেলে থেকে রাত পর্যন্ত নানান কাজে সাহায্য করেন। বিনিয়নে পিন্টু ঝড়ু মিয়াকে প্রতিদিন ২০০/৩০০ টাকা সম্মানি দেন। চা বিক্রি করে সংসার চালানোর পাশাপাশি নিজের লেখাপড়ার খরচে চালিয়ে নেওয়ার সাহস দেখিয়ে সবার প্রশংসার ভাসছেন শিক্ষার্থী পিন্টু। ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাফিদ বলেন, পিন্টু আমাদের সঙ্গে প্রাইভেট পড়তো। সে চায়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা করে উপার্জনের টাকা দিয়ে লেখাপড়া করছে। আমরা তার এ কাজকে শ্রদ্ধা করি। আরেক শিক্ষার্থী শিমুল বলেন, পিন্টুর বিষয়টি সমাজের জন্য ইতিবাচক। যারা চান লেখাপড়া শিখে চাকরি-বাকরি না পেলে নিজে কিছু করবেন তাদের জন্য পিন্টুই উদাহরণ। তরুণ উদ্যোক্তা ও পিন্টু ফুড কর্নারের মালিক নাসির উদ্দীন পিন্টু জানান, আমি গরিব ঘরের সন্তান। আমার বাবা একজন দিনমুজুর। পরিবারের পক্ষে থেকে আমার লেখাপড়ার খরচ চালানো খুবই কষ্টের। তাই আমার মনে হলো লেখাপড়ার পাশাপাশি ঠাকুরগাঁও শহরে থেকে কিছু একটা করা উচিৎ। বা করা যায়। সে লক্ষ্যে আমার পড়ালেখার পাশাপাশি এই ছোট্র একটি উদ্যোগ। বিকেলে ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান করে যা আয় হয় সেটা একটা অংশ আমার লেখাপড়া খরচের জন্য রাখি, আর আরেকটা অংশ আমার মা-বাবার কাছে পাঠায়। চায়ের দোকান দিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সাইবার প্লানেট বিডি