মোহাম্মদ আবুল হাসেম, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বান্দরবানের লামা উপজেলায় পিতার স্বীকৃতি পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ছেলে তানফিজুর রহমান ইমন।গতকাল (শুক্রবার) রাত ৮টায় লামা সাংবাদিক ফোরামের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, লামার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইব্রাহিম লিডার পাড়ার বাসিন্দা বে-সরকারি সার্ভেয়ার ইসহাক মিয়া আমার পিতা হন। ২০০৩ সালে আমার মা মৃত সুফিয়া বেগমের সাথে বিয়ে হয়। আমার মা বেঁচে থাকা অবস্থায় আমার বয়স ৩ বছর পর্যন্ত তিনি আমাকে লালন পালন করেছে। পরবর্তী সময়ে পিতা ইসহাক মিয়া ভরনপোষণ না দেওয়ায় অর্থাভাবে আমাকে সরই ইউনিয়নে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নামক একটি সেবামূলক সংস্থায় পড়াশোনা জন্য ভর্তি করিয়ে দেন। সেখানে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখার পর অষ্টম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য পিতৃপরিচয় প্রয়োজন হলে পরিচয় সংকট ও যাবতীয় কাগজপত্রাদি দিতে না পারায় পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারিনি। তখন থেকে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মী হিসেবে লালিত পালিত হচ্ছিলাম। আমার বয়স যখন ১৮ বছর পূর্ণ হয়। তখন জাতীয় পরিচয় পত্র করার করার জন্য পিতার পরিচয় বিভিন্ন কাগজপত্রের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তিনি আরো বলেন, তখন এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তি ও আত্মীয়-স্বজনের দ্বারস্থ হলে তারা আমার পিতা মো: ইসহাক মিয়ার কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আমি আমার পিতার কাছে গেলে তিনি সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করে এবং বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে আমার অভিভাবক খালাম্মা রাবেয়া ও আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে আমার পিতার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে আমার মা মৃত সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে ২০০৪ সালে করা পিতা ইসহাক মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা টি নথি পত্র হাতে পায়। এই মামলাটি এখনো পর্যন্ত হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইবুনাল বান্দরবানে চলমান রয়েছে। বিধায় স্বীকৃতি পেতে আমি বাবার সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেছি। তিনিও আমাকে নানা কৌশলে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পিতৃত্বের পরিচয়টা দিতে তিনি অনীহা প্রকাশ করেন। স্থানীয়রা জানান, তানফিজুর রহমান ইমন সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নই, আমরা এই ঘটনার একবার সামাজিক ভাবে বসে সমাধান করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ইসহাক মিয়া কেন এমন আচরণ করচ্ছে আমাদের বুঝে আসে না। আমরা তার উচিৎ বিচার চায়। বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিজ্ঞ আইনজীবী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, আসামিদয় পিতার স্বীকৃতি দিবে বলে সামাজিকভাবে একটি আপোষ নামা করেছিল এবং সেটা দিয়ে একবার জামিন নিয়েছিলাম। কিন্তু জামিনে যাওয়ার পরে প্রতারণা করে ছেলেকে এখনো পিতার স্বীকৃতি দেয় নাই। আসামিরা মামলা দীর্ঘায়িত করার জন্য মহামান্য হাইকোর্টে তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছিল। পরবর্তীতে স্থগিত কার্যক্রম বাতিল হওয়ার পর আবার ট্রায়াল কোর্ট আসছে। এই মামলার বিচার কার্যক্রম চলমান আছে।