বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃদিনাজপুরের বীরগঞ্জে শিক্ষক নির্যাতন, হয়রানি ও চৌধুরীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহমানকে অন্যায়ভাবে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে এবং দুর্নীতিবাজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফজলে এলাহী এর প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও অবরোধ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। চলমান বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে বুধবার সকালে উপজেলা শিক্ষক পরিবার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলার সকল মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক কর্মচারীগণ সহ বিক্ষুব্ধ জনতা অংশ গ্রহণ করেন। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে উপজেলা শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক ও প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের, আবুল কালাম আজাদ, কৃষ্ণ চন্দ্র রায়, সহিমুউদ্দিন, মিজানুর রহমান, খুরশিদ আলম চৌধুরী লিটন ও সহকারী প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলাম। চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বক্তারা বলেন, ইউএনও মোঃ ফজলে এলাহী যোগদানের পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অসহনীয় ঘুষ দুর্নীতি এবং সকল স্কুল প্রধানের সঙ্গে অসৌজন্য মূলক আচরণ তার নিত্য দিনের কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে। সুবিধাবাদী এই ইউএনও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের উপর অত্যাচারের সীমা এত বেশি করেছেন, তা কল্পনা ও বর্ণনাতিত। ক্ষমতার দম্ভে তিনি শিক্ষকদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন এবং কথায় কথায় গালমন্দ করে থাকেন, কোন প্রকার কারণ ছাড়াই অহেতুক শিক্ষক কর্মচারীর বিল বেতনে স্বাক্ষর না করে কালক্ষেপণ সহ দেরিতে বিল প্রদান করেন। বীরগঞ্জের ইতিহাসে ইতোপূর্বে কোন ইউএনও এ ধরনের খারাপ আচরণ ও ঘুষ দুর্নীতি করেন নাই। তারা আরো বলেন, ইউএনও ফজলে এলাহী নিয়ম বহির্ভূত, একক ক্ষমতা বলে চৌধুরী হাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহমান খান কে অহেতুক বিধিবহির্ভূত সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। কবিরাজ হাট আদর্শ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন কারণে বীরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষাঙ্গনে চলছে চরম অসন্তোষ ও বিশৃঙ্খলা। অতিষ্ঠ সকল শিক্ষক কর্মচারীসহ আ’ম জনতা। আন্দোলনকারী মানুষ গড়ার কারিগরেরা অনতিবিলম্বে এই দুর্নীতিবাজ ইউএনও ফজলে এলাহীকে প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ পুর্বক ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।
অপরদিকে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে জানান, অভিযুক্ত ইউএনও ফজলে এলাহী রাতভর শিক্ষকদের কর্মসূচি বানচাল করতে রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে মোবাইল ফোন, সাধারণ ছাত্রদের দ্বারা ফেসবুকে বিভিন্ন প্রকার স্ট্যাটাসে হুমকি ও মুখোমুখি কর্মসূচি দিয়ে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা কৌশলের সংঘাত এড়িয়ে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি যথাযথ পালন করেছেন। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মীরা শত স্ফূর্তভাবে অংশ গ্রহণ করে যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। দিনাজপুর জেলা প্রশাসক অবর্তমানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এস এম হাবিবুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন ও থানার ওসি আব্দুল গফুর এর হস্তক্ষেপে ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহীকে প্রত্যাহারের আশ্বাসে প্রায় ৩ ঘণ্টা পর আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেন। প্রশাসনের উপর মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের এই যৌক্তিক দাবি দ্রুত কার্যকর করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহীর সাথে তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি এবং বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে জানতে চাইলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।