নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- নিখোঁজের ৬দিন পর গলাচিপার অহিদুল ফকির (৩২) নামের এক ট্রলার মাঝির লাশ মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দশআনী মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় নৌ-পুলিশ। অহিদুল ফকির পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ২ নং গোলখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সেকান্দার ফকিরের ছেলে। এ ঘটনায় ট্রলার সহ শাকিল (২৪) কে ঝালকাঠী জেলার সুগন্ধা নদীর উত্তর পাড় থেকে আটক করেছে ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশ। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অহিদুল ফকির ভাড়া করা ট্রলার নিয়ে মালামাল পরিবহন করে থাকে। গত ২৫ মার্চ বরিশালের বজলুর রহমানের মালিকানাধীন এমভি মাহিম/মিম ট্রলারে ঢাকার মেঘনা ব্রীজ থেকে ২৪শত ব্যাগ সিমেন্ট বোঝাই করে ভোলার দৌলতখান উপজেলার বাংলা বাজারে যাচ্ছিল, অহিদুল মাঝির সাথে ছিল ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কালাম মিয়ার দুই ছেলে শাকিল (২৪) ও রাকিব (২২) এবং বাবুর্চি। ট্রলার ছাড়ার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত পরিবারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ ছিল। অহিদুলের স্ত্রী আসমা বেগম (২৯) জানান, তার স্বামীর মুঠোফোনে কল দিলে কর্মচারী দুই জন শাকিল ও রাকিব বারবার অহিদুল ফকির ঘুমিয়ে আছে বলে জানায়। বারবার চেষ্টার পরও তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় আত্মীয়-স্বজন গলাচিপা থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে আসলেও থানা পুলিশ তা আমলে নেয়নি। ৩০মার্চ মুন্সিগঞ্জের নৌ-পুলিশ লাশ উদ্ধার করে পরিচয় শনাক্ত করতে না পেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক নিখোঁজের ছবি পোস্ট করে। ফেসবুক থেকে পরিবারের লোকজন অহিদুলকে শনাক্ত করে। পরে অহিদুলের বাবা সেকান্দার ফকির মুন্সিগঞ্জ মর্গ থেকে লাশ গ্রহন করে, লাশের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে। এদিকে ট্রলারে থাকা শাকিল, রাকিব ও বাবুর্চি অহিদুলকে খুন করে নদীতে ফেলে দেয় বলে অহিদুলের আত্মী-স্বজন অভিযোগ করেন। এই খুনের পিছনে আরও অনেকে থাকতে পারে সন্দেহ করছে তারা। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবী জানানো হয়। ঝালকাঠী সদর থানা অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম জানান, ঢাকার ব্যবসায়ী শাখাওয়াত হোসেন সিমেন্ট চুরির অভিযোগের ভিত্তিতে ঝালকাঠী জেলার সুগন্ধা নদীতে পুলিশ টহল অবস্থায় সন্দেহজনক ট্রলারটি আটকের চেষ্টা করে। এ অবস্থায় ট্রলারে থাকা শাকিল, রাকিব এবং বাবুর্চি দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে শাকিলকে সিমেন্ট বোঝাই ট্রলারসহ আটক করা হয়েছে। পরে অহিদুল খুনের বিষয় শাকিল জড়িত আছে বলে জানা গেছে। মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্লা সোহেব আলী জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা হয়নি। গলাচিপা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফেরদৌস আলম খান জানান, ঘটনাটি অন্য এলাকায় হওয়ায় গলাচিপা থানায় অভিযোগ গ্রহন করা হয়নি। গোলাখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ নাসির উদ্দিন জানান, লাশ রবিবার রাত ১১টায় নিয়ে বাড়িতে আসলে ওই রাতে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে, পরিবারে শোকের মাতম চলছে।