সাজ্জাদ আহমেদ মাসুদ, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ- ‘গলাচিপা সেতু বাস্তবায়ন চাই’ এই শ্লোগানের আলোকে রামনাবাদ নদীর উপর ‘গলাচিপা সেতু’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে পটুয়াখালীর গলাচিপায় মানববন্ধন করেছে সর্বস্তরের সাধারণ জনগণ। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় গলাচিপা শহরের আড়ৎপট্টি খেয়াঘাট সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে রামনাবাদ নদীতে ‘গলাচিপা সেতু’ নির্মাণের কথা চলে আসছে। কিন্তু নানাবিধ প্রতিকূলতার কারণে সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া ধীর গতিতে এগুচ্ছে, যা এ এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য মোটেই কাঙ্খিত ছিল না। তাই গলাচিপার সর্বস্তরের সাধারণ জনগণ মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছে। ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মো. শাহ আলম, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মো. জাকির হোসেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সোবাহান, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া (এলএলবি), পৌর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি নাজমুল হুদা রিপন, উপজেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম ও সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাদল প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা সেতুর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নানাবিধ বক্তব্য জনসম্মুখে তুলে ধরেন। তারা বলেন, সেতুটি নির্মাণ হলে- ঢাকা থেকে গলাচিপা-রাঙ্গাবালী-দশমিনার প্রায় ১০ লাখ মানুষের সংযোগ স্থাপন সহজ হবে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা-পাথরঘাটা-গলাচিপা-ভোলা সড়ক যোগাযোগ সংক্ষিপ্ত হবে। মুমূর্ষু রোগীদের দ্রুততম সময়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভাগীয় হাসপাতালে নেয়ার জন্য ফেরির অপেক্ষার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কৃষি ও বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ও উন্নতি পরিলক্ষিত হবে। গলাচিপার ছোট বড় ৫২টি চরসহ পুরো উপজেলায় কোটি কোটি টাকার উৎপাদিত তরমুজ, ধান, ডাল রপ্তানি সহজলভ্য হবে। বর্ষা মৌসুমে জেলাগামী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত জীবন ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয়। ‘গলাচিপা সেতু’ নির্মিত হলে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে নদী পারাপার হতে পারবে। এতে শিক্ষা কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। উপকূলীয় এলাকার মধ্যে যে কয়টি মৎস্য কেন্দ্র রয়েছে তার মধ্যে গলাচিপা অন্যতম। প্রতিবছর এ অঞ্চল থেকে কয়েক লাখ টন মাছ সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়। শুধুমাত্র সরাসরি সড়ক যোগাযোগ না থাকায় বার বার পরিবহন পরিবর্তন করতে হয়। ফলে এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা চরম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। সেতুটি নির্মাণ হলে সম্ভাবনাময় বিশাল এলাকা জুড়ে বিভিন্ন কলকারখানা স্থাপনে সুযোগ সৃষ্টি হবে। উল্লেখ করা যায়, গলাচিপা থেকে নির্মাণাধীন পটুয়াখালী ইপিজেডের দূরত্ব মাত্র ২৭ কি,মি এবং পায়রা পোটের দূরত্ব ৫৫ কি.মি হওয়ায় উক্ত এলাকা বাণিজ্যিকভাবে উন্নত হবে যা নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বেকারত্ব দূর করবে।