বন্দর প্রতিনিধি: নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনজুর আলম অপ্রতিরোধ্য ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর মনজুর আলম স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে বিশাল দাপটে অবস্থায় ছিলেন। নানা অপকর্ম, ওসমান পরিবারের দোসরসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে ১১ জন মেম্বার অনাস্থা দিলেও তা আগের রুপেই। নানান অপকর্ম করেও এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল ও এই ইউনিয়নের ব্যবসায়ী সমাজ। বিশেষ করে ট্রেড লাইসেন্সের সরকার নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত ফি অর্থাৎ ঘুষ বাগিয়ে নিতে না পেরে ইটভাটার মালিকদের প্রকাশ্যে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মনজুর আলমের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনজুর আলমের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য (১ সেপ্টেম্বর) সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ইটভাটার মালিকরা। ভূক্তভোগী ইটভাটার মালিকরা জানান, ‘আমরা প্রতিবছর মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্সের নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়ণ করে আসছি। মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনজুর আলম দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে পরিষদের নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত অর্থ ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। যা সম্পূর্ণ বে-আইনী। গত অর্থবছরে তিনি পরিষদের নির্ধারিত ফি ২০ হাজার ২ শত ৩০ টাকা হলেও তিনি প্রতিটি ইটভাটার মালিকের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন, এমনকি কারো কারো কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকার নেয়ার কথাও শোনা যায়। বর্তমান অর্থবছরে তিনি আরোও বেপরোয়া আচরণ করছেন।
এখনোও পর্যন্ত অদৃশ্য কারণে তিনি ইটভাটার কোন লাইসেন্স নবায়ন করছেন না। তিনি প্রতি ইটভাটা থেকে ২ লক্ষ টাকা করে ঘুষ দাবি করছেন। এজন্য আমাদের সরকারের অন্যান্য দপ্তরের কার্যক্রম আটকে আছে। বিষয়টি ইতিপূর্বে বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। তাতে করে মনজুর আলম আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক শুনানী করতে মঙ্গলবার দুপুরে মনজুর আলম ও আমাদেরকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ডাকেন এবং শুনানী করেন। শুনানী শেষে সেখান থেকে বের হয়ে মনজুর আলম ইটভাটার মালিকদেরকে প্রকাশ্যে হুমকি প্রদর্শণ করেন এবং বলে যে, ট্রেড লাইসেন্স কিভাবে নেয় দেখবে এবং মুছাপুরের মাটিতে কিভাবে ব্যবসা করে সেটাও তিনি দেখে নিবেন’।
ভূক্তভোগী৷ ইউনিয়নবাসী জানান, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে মনজু ২ বার মুসাপুর ইউনিয়নের মেম্বার নির্বাচিত হন। নিজেকে এমপি সেলিম ওসমানের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, নিরিহ মানুষের উপর জুলুম ও এলাকায় নানান অপকর্ম চালিয়ে গেছেন। ২য় বার মেম্বার নির্বাচনে তার ভরাডুবি হবার আশংকা ছিলো, সে নির্বাচনে সেলিম ওসমানের ম্যাকানিজমে সে মেম্বার নির্বাচিত হন। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে গিয়ে চেয়ারম্যান মাকসুদ পদত্যাগ করলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পায় মনজু। এ সুযোগকে অবৈধভাবে ব্যবহার শুরু করতে থাকে মনজু মেম্বার। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অতিরিক্ত ট্রেড লাইসেন্স ফিস আদায়, বিচার ও মামলা বাণিজ্য এবং বালু মহলে চাঁদাবাজির মতো অপকর্ম করে মুসাপুরকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। জাতীয় পার্টি নেতা সেজে এবং সেলিম ওসমানের ডাকে জাতীয় পার্টির অনেক মিটিং মিছিলে লোকজন জড়ো করে স্লোগান দিয়ে অংশ নিয়ে এখন সুবিধা বুঝে বিএনপি নেতা সাজতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার খুটির জোর কোথায় সেই প্রশ্ন করেছেন সচেতন নাগরিকরা।