সাজ্জাদ আহমেদ মাসুদ, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ- অসহায় তামান্নার মেডিকেলে লেখাপড়ার সমস্ত খরচের দায়িত্ব নিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারী) বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হাসান মামুনের সহযোগিতায় পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন ফারজানা আক্তার তামান্না। গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা খুশিতে আত্মহারা। ফারজানা আক্তার তামান্না পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের বড় গাবুয়া গ্রামের মো. আলাউদ্দিন গাজী ও সেলিনা বেগমের ছোট মেয়ে। বাবা একজন দরিদ্র কৃষক, মা গৃহিণী। তার বড় বোন রয়েছেন, তিনি এবার বিএ পাস করেছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক পরিবারের মেয়ে ফারজানা আক্তার তামান্না। প্রামিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় স্বপ্ন দেখেছিলেন বড় হয়ে ডাক্তার হবেন। সেই স্বপ্ন পূরণে কঠোর পরিশ্রম দিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করে অংশ নেন মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায়। কিন্তু সেবার মেডিকেলে উত্তীর্ণ হতে পারেননি তামান্না। তবে হাল ছাড়েননি অদম্য তামান্না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এবার সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ৪৭২৮তম মেধাতালিকা নিয়ে পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন। ফারজানার শিক্ষাজীবন শুরু হরিদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। সেখান থেকে ২০১৫ সালে পিএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে জেএসসি ও ২০২১ সালে এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এর পরে এইচএসসিতে ভর্তি হন বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজে। সেখানে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করেন জিপিএ ৪.৯২ পেয়ে। পাস করার পর প্রথমবার ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভর্তির সুযোগ না পেলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণ করে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তামান্নার বাবা মো. আলাউদ্দিন গাজী বলেন, আমার মেয়ে আজ আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমরা গর্বিত এবং আশা করি সে একদিন দেশের একজন সেরা চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করবে। আমার এতদিনের পরিশ্রম আজ সার্থক। মেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাতে গিয়ে আমার আবাদি জমি বিক্রি করতে হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমার মেয়ের মেডিকেলে পড়ালেখার সব খরচ বহন করায় আমি তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। আল্লাহ তাকে নেক হায়াত দান করুক এবং তার মনোবাসনা পূর্ণ করুক। ফারজানা আক্তার তামান্না বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হাসান মামুনের সহযোগিতায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমার মেডিকেলে লেখাপড়ার খরচের দায়িত্ব গ্রহণ করায় আমি অনেক উপকৃত হয়েছি। চিকিৎসক হয়ে আমার এলাকার গরীব ও অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করবো।’ গলাচিপা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘তামান্না আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। তার ধারাবাহিক মেধা এবং কঠোর পরিশ্রম সকল শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরণা।’ গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়রতাবাদী দল (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হাসান মামুনের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফারজানা আক্তার তামান্নার কথা জেনে তার মেডিকেল ভর্তিসহ লেখাপড়ার সকল খরচের দায়িত্ব নেয়ায় গলাচিপা উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গলাচিপা উপজেলা বিএনপিও সার্বক্ষণিক ফারজানা আক্তার তামান্নার পাশে থাকবে।’