তপু রায়হান রাব্বি ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলাধীন সুবলিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সন্ত্রাসী নূরুল আলম ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে ১৮ জুন বুধবার সকালে সুবলিয়া পাড়া গ্রামের ঈদগাহ মাঠে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে । মানববন্ধন শেষে তারাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে হারুন -অর- রশিদ স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে নূরুল আলম একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। সে একজন মামলাবাজ ও হায়েনার ন্যায় হিংস্র প্রকৃতির মানুষ। সে তাঁর গর্ভধারিনী মাকে ও তার সহোদর বোনদেরকে অত্যাচার নির্যাতন ও পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে বাড়ী থেকে মা ও বোনদেরকে বের করে দিয়ে ছিল। প্রতিবেশী এবং বংশীয় চাচা, চাচাতো ভাইয়েরা মানবিক কারণে আহত বৃদ্ধা এবং তার মেয়েদেরকে আশ্রয় দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে।
এতে নূরুল আলম ও তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তার, সন্তান আফসানা ফারিন মিতু, শফিউল ইসলাম শান্ত দারুনভাবে ক্ষিপ্ত হয়। এ থেকেই মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ আইনুল হুদা ও তার ভাই এবং তাদের সন্তানসহ পরিবার, আত্মীয় স্বজনসহ প্রতিবেশীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে চড়াও হয়। প্রেরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখ রয়েছে নূরুল আলম স্থানীয় সুবলিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিল। সে অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকায় ও এলাকাবাসীদেরকে বিভিন্ন মিথ্যা হয়রানীমূলক মামলা দেয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নৈতিক শিক্ষা হতে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। ফলশ্রুতিতে এলাকাবাসী, সুবলিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকগণ তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করে উপর্যুক্ত কর্তৃপক্ষ বরাবর তাকে অন্যত্র বদলীর আবেদন করেন।
শিক্ষা বিভাগ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী সাব্যস্থ হওয়ায় তাকে ধোবাউড়া উপজেলার গাছুয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কারণে বদলী করেন। নূরুল আলম বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অমান্য করে মহামান্য হাইকোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করে। মহামান্য হাই কোর্ট রীটটি খারিজ করে দেন। এই ঘটনার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাবিবুর রহমান ও সুবলিয়াপাড়া হাজী শামছ উদ্দিন বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ আইনুল হুদা, সহকারী শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, মাওঃ আনিসুর রহমানসহ এলাকার নিরীহ ব্যক্তিদের ও ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকদের উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
ইতোমধ্যে নূরুল আলম সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে সে বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তার বাহিনীর সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ১০/১২ জন। নির্যাতনের স্টীমরুলার চালিয়ে এক পর্যায়ে গত ২৫/০৪/২০১৯ ইং তারিখে মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ আইনুল হুদাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হয়ে আইনুল হুদার ছেলে মোঃ মইনুল হুদাকে অপহরণ করে। এই ঘটনায় ময়মনসিংহের কোতোয়ালী মডেল থানায় এফ আই আর নং-৯৮/৪৪৯, ২৫ এপ্রিল, ২০১৯, ধারা: ৩৬৪/৩২৩/৩৭৯ পেনাল কোড-১৮৬০ আসামী করে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলা রুজু করা হয়। পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ভিকটিম মোঃ মইনুল হুদাকে উদ্ধার করে মূল অপহরণকারীদের মধ্যে ১নং আসামী নূরুল আলমকে গ্রেফতার করে। নূরুল আলম ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অপহরণ করার কথা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে। মামলার চার্জশীট দায়ের করার পর বর্তমানে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতে স্বাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে।
সন্ত্রাসী নূরুল আলমের মেয়ে আফসানা ফারিন মিতু পতিত সরকারের দোসর ছিল। এখন রং পাল্টিয়ে সমন্বয়ক দাবী করে বিভিন্ন অফিস-আদালতে, থানা, কোর্ট-কাচারীতে গিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করছে।
কথায় কথায় ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙ্গিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে।এই দুর্বৃত্ত চক্রটি প্রতিশোধের নেশায় বেসামাল হয়ে সুবলিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাবিবুর রহমান এর বিরুদ্ধেও শিক্ষা বিভাগসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে।
এলাকাবাসীর দাবী মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ আইনুল হুদা, সুবলিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাবিবুর রহমানসহ এলাকার নিরীহ জনসাধারণদেরকে এই অত্যাচারী সন্ত্রাসী নূরুল আলম ও তার মেয়ে আফসানা ফারিন ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।