নিজস্ব সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে স্থানীয় কিশোর গ্যাং লিডার ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর তালিকাভুক্ত দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী নাহিয়ান আজম ইভান (২৫) নিহত হয়েছেন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফতুল্লা থানাধীন ইসদাইর এলাকায় ওসমানী স্টেডিয়াম এর কাছাকাছি স্থানে ইভানকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ইভান সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন ইসদাইর সুগন্ধা আবাসিক এলাকার জামাই বাবুর পুত্র। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইভান’র বিরুদ্ধে হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, ইভটিজিং ও কিশোর গ্যাং এর নেতৃত্ব প্রদান সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে ফতুল্লা মডেল থানা সহ বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়- ইয়াবা রাখার অভিযোগে ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর দুই সহযোগী সহ ইভানকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এরপর চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে ২০২২ সালের ১১ মার্চ ৮ সহযোগী ও বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র সহ ফের গ্রেফতার হন ইভান।
২০২২ সালের ১৯ মে আবারও ইভানকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। সবশেষ ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর ৫ সহযোগী সহ ইভানকে গ্রেফতার করে র্যাব।
এলাকাবাসী জানায়- ইভান জাতীয় পার্টি থেকে চারবার নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নাসিম ওসমান’র পুত্র আজমেরী ওসমান’র ক্যাডার হিসেবে পরিচিত।
ইভান’র সাথে ইসদাইর রেললাইন বস্তির পাগলা সাইফুল, তার মেজো ভাই বাবু ও ছোট ভাই সফিকুল ইসলাম’র সাথে মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। এসব বিষয়ে তাদের মধ্যে একাধিককবার মারধরের ঘটনা ঘটে।
সর্বশেষ এক মাস আগে চোর আখ্যা দিয়ে পাগলা সাইফুল ও তার দুই সহযোগীকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন ইভান। এ ঘটনার পর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠে পাগলা সাইফুল ও তার সহযোগীরা।
ইভান হত্যার সত্যতা নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শরীফুল ইসলাম বলেন- নিহতের লাশ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে আছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ছেলে হত্যার বিচার দাবী করে নিহত ইভান’র বাবা জামাই বাবু বলেন- আমার ছেলের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা ফাঁসি চাই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেনো হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেওয়ার জোড় দাবী জানাচ্ছি।