শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) বিকালে নগরীর কিল্লারপুল এলাকায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে এ কর্মী সভার শুভ উদ্বোধন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ’র সভাপতিত্বে কর্মী সভায় প্রধন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনিরুল ইসলাম সজল বলেন- আপনারা দীর্ঘদিন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে যারা জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাদেরকে আমরা মূল্যায়ন করবো ইনশাল্লাহ। আজকে আমরা আপনাদের মতামত ও পরামর্শ নিলাম। আমরা সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ-আলোচনা করে যারা আপনাদের বিপদ আপদে পাশে থাকবে এমন নেতাকেই নির্বাচিত করে দিব। আমরা এমন নেতা নির্বাচিত করব না, যে নেতা তাদের কর্মীদের রেখে শেখ হাসিনা’র মতন পালিয়ে যাবে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গিয়ে তাদের কিশোর গ্যাং ও চোর-বাটপার নেতা-কর্মীদেরকে রেখে গেছে। তারা এখন সারাদেশে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি সহ সমাজে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করছে। সে-ই নেতাকর্মীরা এখন শেখ হাসিনাকে গালি দিচ্ছে যে শেখ হাসিনা তাদেরকে রেখে পালিয়ে গেছেন। এখন তাদেরকে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি করে খেতে হয়। আমরা আপনাদেরকে এমন নেতা নির্বাচিত করে দিব যে নেতা কর্মীদের সুখে দুখে পাশে থাকবে।
তিনি আরও বলেন- ৫ আগষ্টে রাজনীতি ছিল একরকম আর ৫ আগষ্টের পরে রাজনীতি হয়েছে অন্যরকম। ৫ আগষ্টের আগে আমাদেরকে খুনি শেখ হাসিনা’র বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছে। তখন আমাদের রাজনীতি ছিল চোর পুলিশের মতন শেখ হাসিনা’র সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন করতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। সে-ই অপশক্তি যেন আর নতুন করে মাথা নেড়ে উঁঠতে না পারে, তার জন্য আপনাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আর ৫ আগষ্টের পর থেকে কিন্তু এদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের মতো রাজনীতি আমাদের কাছ থেকে আশা করেনা।
প্রধান অতিথি আরও বলেন- আমাদের নেতা তারেক রহমান বিগত ১৭ বছর আমাদেরকে সুদূর প্রবাস থেকেও আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন এখনো দিয়ে যাচ্ছেন। আর ৫ আগষ্টের পরে আমাদের নেতা সকল হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে মানবিক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যারা আমাদের ক্ষতি করেছে আমরা তাদের ক্ষতি করতে চাই না। যারা অপকর্ম করেছে, তাদের অপকর্মই তাদেরকে জেলে দিতে হবে এবং তাদের বিচার এ-ই বাংলার মাটিতে হবে। সুতরাং আপনারা কারও ক্ষতি করতে যাবেন না।
তিনি আরও বলেন, আগামী যে নির্বাচন হবে সে-ই নির্বাচনে কিন্তু আপনাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে এবং দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে হবে। আগামী নির্বাচন কিন্তু আগের নির্বাচনের মত রাতে সিল মেরে নিয়ে যাবেন তা হবে না। আমাদের নেতা তারেক রহমান আগামীতে যে নির্বাচন হবে সে-ই নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে চায়। সুতরাং আপনাদেরকে কিন্তু আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান’র নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন। কারণ, আমাদের নেতা আমাদেরকে বলেছেন আমরা যেন মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করি। আমরা যেন মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থাকি। আমাদের কিন্তু সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করলে চলবে না। যুবদলের নেতা-কর্মীরা কোন চাঁদাবাজী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকতে পারবে না। কারণ, এদেশের জনগণ বিএনপি নেতা-কর্মীদেরকে ভালবাসেন। কারণ, দীর্ঘ এ-ই ১৭ বছর বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের জুলুম অত্যাচার নির্যাতনেও পাহাড় সমান শক্তি সাহস নিয়ে রাজপথে টিকে ছিলো।
তিনি আরও বলেন- বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র কাঠমো সংস্কারে যে ৩১দফা ঘোষণা করেছেন, তা বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আগামীতে যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে সে-ই নির্বাচনের জন্য বিএনপি সহ সকল রাজনৈতিক দল এ অন্তর্বর্তীকালীণ সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। আমরা বিগত ১৭টি বছর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কিন্তু আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলাম। আগামীতে যেন এদেশের মানুষ আমাদের দলকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে তার জন্য আপনারা মানুষদের সাথে মানবিক আচরণ করবেন। কারণ, আপনার দীর্ঘদিন এ-ই ভোটের অধিকারের জন্য কিন্তু রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। সুতরাং আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আপনাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে। ইনশাআল্লাহ আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম আপন’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে এসময় উপস্থিত ছিলেন- মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে এলাহী সোহাগ, রুহুল আমিন, সাজ্জাদ হোসেন কমল, শেখ মোহাম্মদ অপু, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন আনোয়ার, শাকিল মিয়া, আহসান খলিল শ্যামল, সাইফুল আলম সজিব, জাকির হোসেন সেন্টু, আক্তারুজ্জামান মৃধা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফি উদ্দিন রিয়াদ, শহিদুল ইসলাম, ওয়াদুদ ভূঁইয়া সাগর, পারভেজ খাঁন, মোঃ আরমান হোসেন, কামরুল ইসলাম রনি, মিনহাজ মিঠু, আশিকুর রহমান অনি, জুয়েল রানা, কামরুল হাসান মাসুদ, এরশাদ আলী, ফয়েজ উল্লাহ সজল, আলী ইমরান শামীম, তরিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম আপন, শাহীন শরীফ, মাগফুর ইসলাম পাপন, জুনায়েদ আলম ঝলক, ফয়সাল আহমেদ, সাইদুর হাসান রিপন, আরিফ খাঁন, কায়সার আহমেদ, এড. শাহিন খাঁন, কাজী নাইসুল ইসলাম সাদ্দাম, আলী হোসেন সৌরভ, বাদশা মিয়া, মাসুদ রানা, মাকসুদুর রহমান শাকিল, রুবেল সরদার, রিয়াজুল আলম ইমন, জুনায়েদ মোল্লা জনি, হাবিবুর রহমান মাসুদ, আঃ কাদির, আশরাফুল হক তান্না, জাহিদুল হাসান শুভ, মাহফুজুর রহমান ফয়সাল সহ মহানগর যুবদলের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ সদর থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডের যুবদলের নেতা-কর্মীবৃন্দ।