বাউফল, পটুয়াখালী: দীর্ঘ প্রতীক্ষা, আলোচনার ঝড় এবং হাজারো জল্পনা–কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে বিএনপি’র পক্ষ থেকে মনোনয়ন পেলেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদুল আলম তালুকদার। তিনি ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাউফল থেকে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অনেক দিন ধরে তৃণমূল ও রাজনৈতিক মহলে তার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে নানা আলোচনা চললেও শেষ পর্যন্ত দল তার ওপরই আস্থা রাখে। মনোনয়ন পাওয়ার পর বাউফলে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি শহীদুল আলম তালুকদারের সহধর্মিনী।
তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন। তিনি বলেন, “দল আমাদের মনোনয়ন দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আজ আমরা কোনো আনন্দ মিছিল বা মিষ্টি বিতরণ করবো না। আমাদের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তার এই অবস্থায় কারো আনন্দউল্লাস ভালোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। সবাইকে অনুরোধ করছি—শান্তভাবে, দায়িত্বশীল আচরণ করে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন।” তার দিক নির্দেশনা মূলক বক্তব্য উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে প্রশংসা কুড়ায়। সকলেই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, “যারা এই আসনে মনোনয়নের প্রত্যাশা করেছিলেন—একে.এম. ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার, সহদপ্তর সম্পাদক মনির হোসেনসহ সকল নেতার প্রতি সম্মান জানাই। মনোনয়ন হয়তো আমরা পেয়েছি, কিন্তু আমরা সবাই বিএনপি পরিবারের সদস্য। বাউফলের উন্নয়ন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দলের বিজয়ের জন্য সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। “এটা কোনো ব্যক্তিগত অর্জন নয়—এটা বাউফলের মানুষের দায়িত্ব আমাদের হাতে তুলে দেওয়া। আগামী দিনে আপনাদের সবার সহযোগিতা ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়।” মনোনয়ন ঘোষণার পর বাউফলের বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ডে নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে।
তবে সহধর্মিনীর নির্দেশনার পর আনন্দমিছিল বা উৎসব না করে সবাই স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখে। তৃণমূল নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন পর বাউফলে বিএনপির রাজনীতি নতুন করে সংগঠিত হতে যাচ্ছে। সাবেক এমপি শহীদুল আলম তালুকদারের অভিজ্ঞতা ও গ্রহণযোগ্যতা মাঠের রাজনীতিতে নতুন গতি ফিরিয়ে আনবে বলে তারা আশা করছেন। বাউফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পটুয়াখালী-২ আসনটি বরাবরই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনোনয়নকে ঘিরে যে উত্তাপ তৈরি হয়েছিল, তার অবসান ঘটায় মাঠের রাজনীতি আরও সক্রিয় হবে বলে মনে করছেন তারা। “মনোনয়ন পেয়ে শহীদুল আলম তালুকদারের প্রত্যাবর্তন বাউফলের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলবে। দলীয় ঐক্য বজায় থাকলে এ আসনে বিএনপি শক্ত অবস্থানে থাকতে পারে।” বাউফলের রাজনৈতিক মাঠ এখন সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনমুখী—এগিয়ে যাচ্ছে আগামী দিনের লড়াইয়ের প্রস্তুতি।