তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:কুমিল্লার হোমনায় প্রতারণার মাধ্যমে বোনের সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোঃ মবিনুল হক ও মোঃ গোলাম মোস্তফা নামে আপন দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় বোন আছিয়া খাতুন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের মৃত নায়েব আলী ভূইয়ার স্ত্রী মামলার বাদী মোসা: আছিয়া খাতুনকে তার স্বামী মালিকানাভুক্ত জায়গা জীবিত অবস্থা তার নামে ১৯৯৪ সালে জয়পুর মৌজার জেএল নং ৯৩, বিএস নং ৪০০ খতিয়ানের হালে ১৫১৬, ১৫১৭, ১৫২৯, ১৫৩০ নং দাগে এবং সাবেক ৭৬৭ নং দাগের পারিবারিক কবরস্থানসহ মোট ৫৪ শতক জায়গা দানপত্র দলিলের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি করে দিয়ে যায়। যা তিনি পরবর্তীতে মালিক ও ভোগ দখল করে। উক্ত জায়গা সু-কৌশলে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে আছিয়া খাতুনের আপন দুই ভাই মবিনুল হক ও গোলাম মোস্তফার নামে লিখে নিয়ে যায়।
আছিয়া খাতুনের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার এম এ কাউছার অভিযোগ করে বলেন, আমার মা তার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত একই মৌজার কয়েকটি দাগে ৫৭.৫ শতাংশের জমির মধ্যে ৫৪ শতাংশ জমি তার আপন দুই ভাই গোলাম মোস্তফা ও মবিনুল হককে দান করার প্রস্তাব করলে তারা সুকৌশলে আমার মায়ের পৈতৃক সম্পত্তি লিখে না নিয়ে বেআইনীভাবে আমার বাবার দিয়ে যাওয়া রেজিষ্ট্রিকৃত ৫৪ শতাংশ জায়গাসহ রেকর্ড বহির্ভূত ৬১শতাংশ জায়গায় হেবা দলিলের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি করে নিয়ে যায়। এবং তা গোপন রেখে তাদের নামে নামজারি করে বিক্রি করবে বলে প্রকাশ পেলে তখন আমার মা আছিয়া খাতুন আশ্চার্য্যন্তিত হয়ে যান এবং পরবর্তীতে তাদের প্রতারণা সম্পর্কে অবগত হয়ে এই মিথ্যা ও জালিয়াতিপূর্ন দলিল বাতিলের জন্য আদালতে মামলা করেন। পাশাপাশি মামলা চলমান অবস্থায় এই জমিটি যেনো কোন প্রকার নির্মাণ, বিক্রয় এবং ভোগদখল আইনত দন্ডনীয় মর্মে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। বর্তমানে জমিতে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে।
এছাড়াও কাউছার আরো বলেন, জালিয়াতির মাধ্যমে তারা আমার মায়ের কাছ থেকে যে জমি গুলো নিয়েছে তার মধ্যে একটি জমিতে আমার বাপ-দাদার কবরসহ তাদের পূর্বপুরুষদের পারিবারিক কবরস্থান হিসাবে অধ্যাবধি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে দলিলে কবরস্থান বাদ দিয়ে রেজিষ্ট্রি করার কথা থাকলেও তারা সেই কবরস্থানও তাদের নামে নামজারি করে ফেলেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত মোঃ মবিনুল হক বলেন, আছিয়া খাতুন আমার বোন আর কাউছার আমার ভাগিনা। যে জায়গাটি নিয়ে মামলা করেছে, সেই জায়গাটি অন্যত্র বিক্রি করতে চেয়েছিলো কিন্তু আমরা অন্য কারো কাছে বিক্রি করতে দেইনি। নিজেরাই রেখে দিয়েছি। আমরা কোন জালিয়াতি করি নাই। তাদের অভিযোগ মিথ্যা। তবে কবরস্থান ভুলক্রমে খারিজ করা হয়েছে। এটা খারিজ থেকে বাদ দেওয়া হবে। কিন্তু তারা অন্যের পরোচনায় বিনা পয়সায় জায়গা নিবে মনে করে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এটা কি মামা ভাগিনার সম্পর্ক? আমি ছোটবেলায় তাদেরকে লালনপালন করেছি, চাকরি দিয়েছি। এখন তারাই আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।