তপু রায়হান রাব্বি ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধিঃ বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হচ্ছে আগামী ২৮শে সেপ্টেম্বর থেকে। দুর্গাপূজা ঘিরে এবারও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও কাজ করবেন। গত বুধবার থেকে মাঠে নামছেন তারা। দুর্গোৎসব চলার সময়ে গুজব ছড়িয়ে কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ‘তাৎক্ষণিক অ্যাকশন’ নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ ও র্যাব। জানা গেছে, সারা দেশে প্রায় ৩৩ হাজার বোঝা মন্ডপের মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় ৪৬টি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি এবং প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে।
প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা, সার্বক্ষণিক পুলিশ টহল, গোপন পোশাকের আইনশৃঙ্খলা সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করবে। ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম সীমা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ আব্দুল হাদি এবং উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মৌসুমি আক্তার পৃথকভাবে টিম গঠন করে আইন শৃঙ্খলা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছেন। রাত দিন ২৪ ঘন্টা খোঁজখবর নিচ্ছেন পূজা মন্ডপের। ওসি নিজেও পূজামন্ডপ পরিদর্শন সহ সচেতন করছেন। উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের কর্মকর্তার দিকনির্দেশনায় বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) সানাউল্লাহ কে সাথে নিয়ে পৌরসভার প্রত্যেকটি পূজামন্ডপ পরিদর্শন/পর্যবেক্ষণ করেন তাক্ওয়া অসহায় সেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মোঃ তপু রায়হান রাব্বি ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক বাহার উদ্দিন প্রমূখ।
পর্যবেক্ষণকালে পূজা কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের সাথে কথা বলে তারা জানান, প্রশাসনের দিকনির্দেশনা এবং তাদের সার্বিক সহযোগিতায় পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা নেওয়া হচ্ছে। পর্যবেক্ষণ কালে অনেক পূজামন্ডপে দেখা যায় প্রতিমা স্থাপন করা হয়নি। আগামী শুক্রবারের মধ্যেই বাহির থেকে এনে পূজা মন্ডপে স্থাপন করবেন। এছাড়াও অনেক প্রতিমাকে রং তুলির ছোঁয়ায় সাজানো হচ্ছে নতুন রূপে। ইউএনও সাদিয়া ইসলাম সীমা বলেন, মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হলো শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। কারিগরদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় শেষ মুহূর্তে দেবী দুর্গাকে সাজাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। মণ্ডপে মণ্ডপে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। আর পূজার সার্বিক নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ঘটলে, উপজেলা কন্ট্রোল রুম 01749646468, ফুলপুর ওসি 01320-103451, অস্থায়ী তারাকান্দা আর্মি ক্যাম্প 01861-593009, সহ ৯৯৯ এ কল দিও সহযোগিতা নিতে পারবে।
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আব্দুল হাদি জানান, পূজার সময় যাতে কেউ ইভটিজিং, চুরি, ছিনতাই বা মাদকসেবনের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াতে না পারে, সেজন্য থানার একাধিক টিম সার্বক্ষণিক সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ পূজা মণ্ডপের আশপাশে মদ্যপ অবস্থায় ঘোরাফেরা করে বা ইভটিজিংয়ের চেষ্টা করে, তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী ও অপরাধীদের ধরতে ফুলপুরে জুড়ে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।” স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, ওসি আব্দুল হাদির নেতৃত্বে পুলিশের কঠোর তৎপরতায় ফুলপুর সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পূজামণ্ডপে আগত ভক্তরা যাতে নিরাপদে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন, সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে।ওসি আব্দুল হাদি সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে পুলিশের পাশে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।