1. [email protected] : Gk Russel : Gk Russel
  2. [email protected] : Nazrul Islam : Nazrul Islam
  3. [email protected] : pbangladesh :
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
শার্শার ডিহি ইউনিয়নে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহরাব হোসেনের গনসংযোগ রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সেলিম প্রধানের প্রার্থীতার বৈধতার আদেশ স্থায়ীভাবে স্থগিত জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের রাস্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবীতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ লাইসেন্সবিহীন টিভি চ্যানেল বন্ধে কার্যক্রম শুরু উলিপুরে দীর্ঘদিনেও ব্রিজ সংস্কার না হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে পূবাইলে হারেজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ শাহী সদস্য নির্বাচিত সোহেল চিশতী শার্শাকে ডিজিটাল হিসেবে গড়তে চাই উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহরাব হোসেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের লাশ উদ্ধার  বন্দরে দোয়াত কলম প্রতিকে গনসংযোগ করেন কৃষকলীগ নেতা হাজী মাঈনউদ্দিন দানবীর আলহাজ্ব বশির আহমদ সাহেবের মাতার রূহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

ফেলে আসা সেই জীবন-মুহম্মদ আজিজুল হক

সংবাদদাতা :
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৬০ বার দেখা হয়েছে

ফেলে আসা সেই জীবন-লেখক : মুহম্মদ আজিজুল হক, চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত-বহুবছর পরে এই তো সেদিন দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টি এলাকায় গিয়েছিলাম একটি প্রয়োজনে। চতুর্দিকে দৃষ্টি মেলে দেখতেই অতীতস্মৃতিকাতরতায় পেয়ে বসলো আমাকে। এই সেই প্রিয় Alma Mater যেখানে প্রায় অর্ধশতাব্দীকাল পূর্বে আমরা পড়ালেখা কোরেছি। আমরা, অর্থাৎ আমার সহপাঠী-সহপাঠিনীগণ ও আমি। আমরা ১৯৭৪-এর সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৮০-র মার্চ পর্যন্ত (যদি ভুল না কোরে থাকি) এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলাম। ভাবলাম, হাতে যখন আধাঘন্টাখানেক সময় আছে তখন কালের আবর্তনের মাঝে নিজের হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি হাতড়িয়ে সময়টা কাটাই।বিশ্ববিদ্যালয় খোলা ছিল। লাঞ্চব্রেক চলছিল। তাই ছাত্রছাত্রীদের পদচারণায়, তাদের আলাপনে ও কলগুঞ্জনে মুখর ছিল কলাভবনের বহিরাঙ্গনটি, বিশেষ কোরে লাইব্রেরীর সম্মুখের অস্থায়ী ফুডষ্টল, কলাভবনের ক্যাফেটেরিয়া (আমাদের সময়ে এটি ছিল না) ও মধুর ক্যান্টিন এলাকা জুড়ে। ছোট এ ফুডষ্টলটিতে বেশ সস্তায় মুখরোচক খাবার মেলে। যেমন, চিকেন ভুনা খিচুড়ি ৩৫ টাকা, ফ্রাইড চিকেন এন্ড রাইস ৩৫ টাকা, ফ্রাইড চিকেন ১০ টাকা, স্যান্ডুইস ২৫ টাকা, আদা রঙ চা ৫ টাকা, ইত্যাদি। ওখানেই লক্ষ্য কোরলাম ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড়টা নিবিড়। কলাভবনের ক্যাফেটেরিয়ায় তুলনামূলকভাবে ভিড় ছিল কম। মধুর ক্যান্টিন-বিল্ডিংটি সংস্কার করা হয়েছে সুচারুরূপে; তবে ভেতরের দু’একটি টেবিল ব্যতীত বাকি সব টেবিল ছিল ফাঁকা।লাইব্রেরীর দিকে দৃষ্টিপাত কোরতেই দেখি ও আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকছে। তা উপেক্ষা করার সাধ্য ছিল না আমার। ভেতরে গেলাম। নীচের তলার স্টাডি হলটি ঘুরে ফিরে দেখলাম। সংযুক্ত বিশাল পুস্তক-সংরক্ষণ হলটিও দেখলাম। আমাদের সময়ে এটির অস্তিত্ব ছিল না। সিঁড়ি বেয়ে এবার দোতলায় যেতে উদ্যত হলেই দ্বাররক্ষক বাধা দিল। পরিচয় দেবার পর অনুমতি মিললো। ওপরের স্টাডি হলে ঢুকেই আবেগাপ্লুত হলাম। প্রায় ছয় বছরের ভার্সিটি জীবনে (আমরা সেশন জ্যামের শিকার ছিলাম) কত শত ঘন্টা যে কাটিয়েছি ঐ হলে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। এখন আমরা ওখানে অবাঞ্ছিত। ঢুকতে হলে অনুমতি নিতে হয়। এই তো জীবন! কালের নিষ্ঠুর স্রোত মানুষকে সব জায়গা থেকে অপসারণ করে ভাসিয়ে নেয়। আমাদের স্থলে এখন ওখানে বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীরা জ্ঞানের সাধনায় নীরব। তাদের মনোযোগ যাতে বিঘ্নিত না হয়, তাই দ্রুত সেখান থেকে চলে এলাম।কলাভবনের সামনের সবুজ ঘাসের গালিচাবৃত আইল্যান্ডটিকে আরো সুন্দরভাবে রক্ষণাবেক্ষণের প্রচেষ্টা চোখে পড়লো। ভবনের সামনের প্রধান সড়কের পাশে মেইন গেইটটি নতুনভাবে নির্মিত হয়েছে। পুরনো গেইটের একটি পিলারের গায়ে বসানো একটি ফলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে একটি অমিয় বাণীটি উৎকীর্ণ ছিলঃ “তুমিই হবে সেই সে মানুষ অধ্যবসায় তপস্যায়; সূর্যসম রাঙিয়ে দেবে শেষ জীবনে দিগ্বিদিক।” বর্তমান গেইটে সেই সুধাময় বাণীটি আমার চোখে পড়ে নি। আমার ভুলও হতে পারে। আমি খুব তাড়াহুড়ো কোরে সবকিছু দেখছিলাম। মেইন গেইটের সামান্য ভেতরে চারটি দন্ডায়মান আয়তাকার কংক্রীট স্লাবে মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাঁরা শহীদ হয়েছিলেন তাঁদের নামসহ পোরট্রেইট খচিত হয়েছে।মেইন গেইটে দাঁড়িয়ে কলাভবনের দিকে তাকালে সর্ববামে চোখে পড়ে সেই বটগাছটি যেটা আমাদের সময়ে খুব ছোট ছিল। আজ সেটি প্রকান্ড সব ডালপালা ও পত্রপল্লব নিয়ে একটি মহীরুহে পরিণত হয়েছে। বহুবছর ধরে ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে না এবং সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে। তাই বোধকরি ঐ বটবৃক্ষটির নীচে কোনো জটলা দেখলাম না। কোনো পোস্টার বা ব্যানারও নেই। ভবনের সম্মুখভাগে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমাদের সময়ে তিলে তিলে নির্মিত ভাস্কর্য “অপরাজেয় বাংলা”। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে এটি দাঁড়িয়ে থাকবে মুক্ত আকাশের নীচে এমনি কোরে হাজার বছর।কলাভবনের সর্বপশ্চিমের ফটক দিয়ে ভবনে প্রবেশ করলাম। ১৯৭১ সালের ০২ মার্চ ঐ ফটকটির ছাদেই সর্বপ্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ‘চার খলিফা’ নামে খ্যাত তৎকালীন চার ছাত্রনেতার একজন আ স ম আবদুর রব। সেই পতাকার লাল বৃত্তের মাঝে হলুদ রংয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র সন্নিবেশিত ছিল। পরবর্তীকালে, ১৯৭২ সালের শুরুতে জাতীয় পতাকা হতে মানচিত্রটি সরিয়ে ফেলা হয়।সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে দ্রুতই পৌঁছে গেলাম আমাদের হৃদয়ে সযত্নে লালিত আমাদের সেই প্রিয় ইংরেজী বিভাগে। লাঞ্চব্রেক থাকাতে কলাভবনের সকল বারান্দা ছিল কার্যত জনশূন্য। কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর সঙ্গেই দেখা হলো না। কেবলমাত্র, ডিপার্টমেন্টের সেমিনার লাইব্রেরীতে ঢুকে দু’তিনজন ছাত্র-ছাত্রীকে অধ্যয়নরত দেখলাম। ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানের কক্ষটির দরোজার মাথায় দেয়ালে একটি নেইমপ্লেইটে লেখাঃ Chairperson, Zerin Alam, Department of English। চেয়ারপারসনের নামের পূর্বে Prof. বা Dr. এসব কিছু নেই। নেইমপ্লেইটটি একটু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বলে প্রতীয়মান হলো।ডিপার্টমেন্টের বারান্দার ধার ঘেঁষে অসংখ্য টবে ইনডোর প্লান্টস। আমাদের সময়ে এগুলি ছিল না। থাকলেও খুব চোখে পড়ার মতো সংখ্যায় ছিল না। আমরা বারান্দার পাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে দাঁড়িয়ে গল্প কোরতাম বা পরবর্তী ক্লাসের জন্য অপেক্ষা কোরতাম। নির্জন বারান্দা দিয়ে চলতে চলতে আমার মানসপটে মুহূর্তে ফুটে উঠলো আমার সহপাঠী-সহপাঠিনীদের মুখ। স্মৃতির বাতায়নে উঁকি দিল আমাদের সহপাঠীদের মাঝে কয়েকটি ব্যর্থ প্রেমের নায়কদের মুখও। যেসব প্রেমের অধিকাংশ ছিল হয় একপেশে নতুবা অব্যক্ত। কিন্তু সেই অব্যক্ত প্রেমের অদৃশ্য অনলের নির্মম দহনে আমার সহপাঠী-নায়কেরা দগ্ধ হয়েছে সুদীর্ঘকাল; প্রণয়গুলোর কোনোটাই পরিণয়ে গড়ালো না তাই।
দোতলা থেকে নেমে কলাভবনের পশ্চাদদ্বার দিয়ে বের হয়ে চোখ পড়লো IBA ভবনের দিকে। বামদিকে যেটা অতীতে ছিল NIPA ভবন সেটি এখন কী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে জানতে পেলাম না। তবে ভবনটির একটি জায়গায় দেয়ালে স্থাপিত একটি ফলকে লেখা ‘SIRAJUL ISLAM LECTURE HALL’। নামের মধ্যে ‘CHOWDHURY’ না থাকায় আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক Sirajul Islam Chowdhury স্যারের নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে কিনা বুঝতে পারিনি।মধুর ক্যান্টিনের সামান্য পূবে অবস্থিত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ; একটি সুরম্য বহুতল ভবনে। এটি এই প্রথম দেখলাম। অন্য একটি স্থাপনা সম্পর্কে কয়েকটি ছেলেমেয়ের কাছে জানতে চাইলে তারা আমাকে প্রশ্ন করলো আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম কিনা। আমার হ্যাঁ-সূচক জবাব শুনে তারা জিজ্ঞেস করলো কোন ডিপার্টমেন্টে। জবাবে ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট বলতেই তারা প্রায় সমস্বরে বলে উঠলো, “You must have been a brilliant student, we see!” আমি বললাম, “Not really”। তাদের আরো প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আমাকে বলতে হলো আমি BCS (Foreign Affairs)-এর একজন অফিসার ছিলাম। এখন অবসরপ্রাপ্ত। তারা হৈচৈ কোরে উঠে জিজ্ঞেস করলো কিভাবে প্রস্তুতি নিলে বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করা যায়। আমি সংক্ষেপে তাদেরকে আমার পরামর্শ দিলাম।ঘড়ির কাঁটা বার বার জানান দিচ্ছিল যে ফিরতে হবে। তাই খুব ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আমার প্রিয় হলের (মুহসীন হল)দিকে পা ফেরানো হলো না। কিন্তু মনের গভীরে একটি সূক্ষ্ম বেদনা নিয়ে গাড়িতে উঠে ভাবলাম, এমনই আর একটা দিনে আমরা সব সহপাঠী-সহপাঠিনীরা একত্রে এখানে এসে একটি দুপুর কাটাই না কেন; আমাদের সকলের এই প্রিয় স্মৃতিময় মায়াময় ক্যাম্পাসে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:০২
  • ১১:৫৯
  • ৪:৩১
  • ৬:৩৩
  • ৭:৫৩
  • ৫:২১
শিক্ষা তথ্য পত্রিকার কোন লেখা, ছবি বা ভিডিও কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: সাইবার প্লানেট বিডি