স্টাফ রিপোর্টারঃ নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন দক্ষিণ লক্ষণখোলা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র মাদক ব্যবসা, নারী পাচার ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর দাবি, ওই এলাকার বাসিন্দা আশাবুদ্দিনের মেয়ে আইরিন সুলতানা ওরফে সাথি এবং তার স্বামী মোহাম্মদ ফারুক এই চক্রের মূল নিয়ন্ত্রক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ ফারুক পেশায় ড্রাইভার হলেও তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে কক্সবাজার ও টেকনাফ এলাকা থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে থাকেন।
অভিযোগ রয়েছে, প্রকাশ্যে মাদক বিক্রির মাধ্যমে তারা যুব ও তরুণ সমাজকে মাদকের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। এছাড়া আইরিন সুলতানা ও তার মা নুরবানু বেগমের বিরুদ্ধে অসহায় গৃহবধূ, তরুণী ও ভাসমান নারীদের আশ্রয় দেওয়ার নামে নিজ বাসভবনে রেখে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, এভাবে বহু অসহায় নারীর সম্ভ্রম ও জীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলাকা সূত্রে আরও জানা যায়, আইরিন সুলতানার সঙ্গে এলাকার বিভিন্ন সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, চোর ও অপরাধী চক্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তার ছোট ভাই রাকিব এলাকায় একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত বলে অভিযোগ রয়েছে।
নুরবানু বেগমের বিরুদ্ধে সিলেটের বিশ্বনাথ এলাকা থেকে এক শ্রমিকের ১৪ বছর বয়সী কিশোরীকে এনে গোপনে আটক রেখে অনৈতিক কাজে ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে। একপর্যায়ে ওই কিশোরী নিখোঁজ হয়ে যায়, যার কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি বলে দাবি স্থানীয়দের। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—আইরিন সুলতানা প্রাথমিক শিক্ষার গণ্ডি অতিক্রম না করলেও নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে জেলা প্রশাসক, র্যাব, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) ও থানার ওসিসহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কিস্তি ও চক্রবৃদ্ধি সুদের ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, এই সুদের ফাঁদে পড়ে অনেক মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে বাড়িঘর বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইরিন সুলতানা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পহেলা মহরম উপলক্ষে বন্দর থানার ফুলহর যুব সমাজের উদ্যোগে ১৭, ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ রোজ বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ৩ দিন ব্যাপী ১৫ তম বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলনের আয়োজন করেছেন স্থানীয় যুবসমাজ। কিন্তু এ ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। আয়োজকরা জানান, ‘আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও খুনী হাসিনা পালিয়ে যাবার পরেও বীরদর্পে আছেন হাসিনার কিছু নেতা-কর্মীরা। তাদের মধ্যে ফুলহর এলাকার যুবলীগ নেতা অহিদ অন্যতম। অহিদের গুপ্ত ইশারায় ফুলহর যুব সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত ৩দিন ব্যাপী মাহফিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সে পালিয়ে থেকেও এলাকার বিভিন্ন বিষয়ে কুটচাল দিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় বিভিন্ন বিভক্তি সৃষ্টি করে নানান ধরণের ভুলবুঝাবুঝি ও ধুম্রজাল তৈরি করছে। মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব ও ঝগড়া বাধাচ্ছে।
ওয়াজ মাহফিলের উপর তার এখন কুনজর পড়েছে। তার পছন্দমতো মেহমান দাওয়াত না দেয়ায় সে মনে করছে তার আধিপত্য বিস্তার করা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তাই তার আশীর্বাদপুষ্ট ও এলাকার দুষ্ট প্রকৃতির দুই ব্যক্তি বারেক মেম্বার ও শাহীন শাহ মিঠুকে দিয়ে তাদের যোগসাজশে এই মাহফিল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে’। এলাকাবাসী বলেন, মাহফিলের সকল আয়োজন সম্পন্ন হবার পরেও এলাকার ছেলে হয়ে সে অপপ্রচার চালিয়ে ও কুটচাল দিয়ে এলাকার মাহফিলকে বন্ধ করে দিয়েছে। অহিদ কুরআন, সুন্নাহ, ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদী জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় যুবলীগ নেতা ওহিদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও মাহফিল আয়োজক কমিটি।