অলিউল্লাহ্ ইমরান, বরগুনা: বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ বুড়িরচর গ্রামে এক নারীকে বাসায় একা পেয়ে মারধর ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মোসাঃ আসমা (৩৬) গত ২১ জুলাই সন্ধ্যায় এই ঘটনার শিকার হন বলে জানান।
জানা গেছে, মোসাঃ আসমা একজন গৃহবধূ। তার স্বামী মোঃ বেল্লাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় রয়েছেন। ফলে তিনি তার বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছেন।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তুচ্ছ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রতিবেশী মোঃ কামাল হোসেনের ছেলে মোঃ হাসান (৩২) ও তার স্ত্রী সনিয়া (২৮) অতর্কীত ভাবে আসমার বাড়িতে ঢুকে তাকে কাউফলা গাছের ডাল দিয়ে মারধর ও নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আহত অবস্থায় মোসাঃ আসমাকে বরগুনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনার পরদিন তিনি বরগুনা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এব্যাপারে ভুক্তভোগী আসমা আক্তার বলেন, আমি অভিযুক্ত হাসান এর কাঠবাদাম নিয়ে গেছি এই বলে সে ও তার স্ত্রী সোনিয়া আমাকে মারধর শুরু করে। আমাকে আমার মা ধরতে গেলে তাকেও ধাক্কাদিয়ে ফেলে দেয় তারা। তাদের মারধরের কারনে আমি গুরুতর আহত হয়ে বরগুনা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে হাসান আমার পরিবারকে হুমকি ধামকী দিতে শুরু করে। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি।
স্থানীয় মো. ছগির হাওলাদার জানান, হাসান প্রায়ই মাছ ধরতে গিয়ে প্রতিবেশীদের নিয়ে অভিযোগ করত যে তারা তাকে অত্যাচার করে। কয়েকদিন আগে হাসানের ছোট মেয়ের সাথে কাট বাদাম নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়, যেখান থেকে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও বৃষ্টির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
অভিযুক্ত মো. হাসান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পারিবারিক জমি তারা অবৈধভাবে ভোগদখল করে আসছিল। প্রায় দুই বছর আগে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে আমরা আমাদের জমির দখল পুনরায় ফিরে পাই। সেই সময় থেকেই তারা আমাদের পরিবারের প্রতি শত্রুতামূলক আচরণ শুরু করে। কয়েকদিন আগে আমার ৬ বছরের কন্যা সন্তানের সঙ্গে সামান্য ‘কাট বাদাম’ বিষয়ক একটি ঘটনায় তারা অকারণে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং পরে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলে। আমার স্ত্রী বর্তমানে গর্ভবতী, অথচ তার বিরুদ্ধেও তারা অপমানজনক ও কল্পিত অপবাদ ছড়াচ্ছে। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক এবং আমাদের পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা।
এব্যাপারে বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইয়াকুব হোসেন বলেন, এব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিলো। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।