গত ১৭ জুন ২০২৫ খ্রিঃ(মঙ্গলবার) সকাল অনুমান ০৮.৪০ ঘটিকায় ফতুল্লা মডেল থানাধীন পূর্ব শিয়াচর লালখা এলাকায় এডভান্স গার্মেন্টস এর গলির পূর্ব পাশে ড্রেনে একটি বস্তা ভেসে উঠলে উৎসুক জনতা কৌতুহল বশতঃ বস্তায় কি আছে দেখতে গিয়ে লাশ দেখতে পান। উক্ত সংবাদ উক্ত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ রঞ্জু মিয়াকে অবগত করলে তিনি ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে বস্তায় লাশ দেখতে পেয়ে বিষয়টি ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশকে অবগত করেন।
উক্ত সংবাদ প্রাপ্তির পর ফতুল্লা মডেল থানার অপারেশনস পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ)/মোঃ আনোয়ার হোসেন ও সঙ্গীয় এসআই/মোঃ মালমগীর হোসেন ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় বস্তাবন্দি লাশ ড্রেন থেকে উত্তোলন পূর্বক বস্তা থেকে বের করার পর স্থানীয়রা ভিকটিমের নাম জনি সরকার(২৫), পিতাঃ করুনা সরকার, মাতাঃ মিতা সরকার, এ/পি সাং-পূর্ব শিয়াচর লালখা দুলাল মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া থানাঃ ফতুল্লা মডেল, জেলাঃ নারায়ণগঞ্জ বলে জানায়। উক্ত সংবাদ ভিকটিমের বাসায় জানানো হলে ভিকটিমের বাবা সহ আত্মীয় স্বজন দ্রুত ঘটনা স্থলে ছুটে আসেন এবং ভিকটিমের বাবা-মা ভিকটিমের লাশ শনাক্ত করেন।
লাশ শনাক্তের পর নিহত জনির বাবা বাদী হয়ে একই তারিখ রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নারায়ণগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব প্রত্যুষ কুমার মজুমদার মহোদয়ের নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও ফতুল্লা থানা পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামি গ্রেফতার করতে অভিযানে নামে। ফতুল্লা মডেল থানার তদন্ত টিম সিসি ফুটেজ সংগ্রহ সহ সার্বিক তদন্তে হত্যাকান্ডের সহিত বাবা-মায়ের জড়িতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিহতের বাবা-মাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের নিকট হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। নিহত জনি সরকার মাদকসক্ত এবং বখাটে স্বভাবের ছিলো।
মাদকের টাকার জন্য প্রতিনিয়ত জনি সরকার তার বাবা-মাকে চাপ প্রয়োগসহ মারধর করতো। ১৬ জুন (সোমবার) রাতেও টাকার জন্য জনি সরকার তার বাবা-মার সাথে খারাপ আচরণ করে। জনি সরকারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তার পিতা-মাতা তাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৬ জুন ২০২৫ খ্রিঃ রাত আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকার দিকে রাতের খাবার খেয়ে জনি সরকার ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমন্তবস্থায় জনি সরকারকে তার বাবা করুনা সরকার প্রথমে রুটি বানানোর বেলুন দিয়ে মাথায় এবং মুখে আঘাত করে। এতে জনি সরকার অচেতন হয়ে পড়লে জনির বাবা ও মা মিলে শ্বাসরোধ করে ছেলে জনির হত্যা নিশ্চিত করে।
পরে ১৭/০৬/২৫ খ্রিঃ রাত আনুমানিক ০২.০০ ঘটিকার দিকে উভয়ে মিলে মৃত ছেলের হাত-পা বেঁধে একটি বস্তায় ভরে। অতঃপর ভিকটিমের বাবা করুনা সরকার নিজেই মাথায় করে লালখা মোস্তফার বাড়ীর গলির ড্রেনে ফেলে রেখে যায়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।