নিজস্ব সংবাদদাতাঃ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে থাকা আসামি ছাত্রদল নেতা মোঃ নাজমুল মৃধা ৪ ঘন্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ডান্ডাবেরি পড়া অবস্থায় বাবার জানাযায় অংশ নিয়েছেন। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তির সময় শেষ হয়ে যাবার কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই বাড়িতে বিকেল ৩ টায় বিশেষ জানাযা নামাজ পড়ানো হয়। জানাযার নামাজের সময় তার পায়ে ডান্ডাবেরি পড়ানো ছিল। জানাযা শেষে তাকে আবার পটুয়াখালী জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। প্যারোলে মুক্তি পাওয়া ছাত্রদল নেতা নাজমুল মৃধা উপজেলার সদর দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের পশ্চিম সুবিদখালী ০২ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মোতালেব মৃধার ছেলে ও মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক। নাজমুলের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রদল নেতা নাজমুল মৃধার বাবা মোঃ মোতালেব হোসেন মৃধা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে নয়টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মোতালেব হোসেন মৃধা দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতিও ছিলেন। তিনি বর্তমানে মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। নাজমুলের জানাযায় অংশগ্রহণের জন্য বাড়ির উঠোনে তিনটার দিকে বিশেষ জানাযা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। পরে বিকেল পাঁচটায় স্থানীয় সুবিদখালী সরকারি রহমান ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাযা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নাজমুল মৃধার বড় ভাই মোঃ রাসেল মৃধা জানান, গত বছরের ২০ ডিসেম্বর তাঁদের বাড়ির সামনে থেকে নাজমুল মৃধাকে আটক করে পুলিশ। পরে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়। তবে ওই মামলায় নাজমুল এজাহারভুক্ত আসামি ছিল না। বাবার জানাজায় অংশ নিতে এবং শেষ বারের মতো দেখতে আজ বেলা একটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দেন আদালত। জানাযার সময় হাতকড়া খুলে দিলেও পায়ের ডান্ডাবেড়ি খুলে দেয়নি পুলিশ। তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই ছাত্রদলের রাজনীতি করার অপরাধে পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় তাঁকে বাবার জানাজায় অংশ নিতে হলো, এর চেয়ে কষ্টের কী হতে পারে? ভাই আমার বাবার কবরে মাটিও দিয়ে যেতে পারল না। প্যারোলের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় শুধু ভাইয়ের জন্য ছোট পরিসরে একটি জানাযা নামাজের আয়োজন করা হয়েছিল। পরে তাকে কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন, নাজমুল মৃধাকে পাঁচ ঘণ্টার জন্য শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছিলেন আদালত। নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁর পায়ের ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়া হয়নি।