মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি – মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের ভট্টাচার্য্যের বাগ এলাকার হাজী হাবিবুর রহমান শেখ এর পুত্র দুলাল শেখ ৮ লাখ টাকার প্রতারণা আত্মসাৎ করার নামে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে ইব্রাহিম শিকদারের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ উঠেছে।
বাদী দুলাল শেখ (৫৩) ভট্টাচার্য্যের বাগের সেরাজল শিকদার ওরফে শেরু শিকদারের পুত্র ইব্রাহিম শিকদারের (৪০) বিরুদ্ধে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে সিআর মামলার নং৫৪৮ ধারা: ৪০৬/৪২০/৫০৬/ নামে দায়ের করা হয়েছে।
মামলার তথ্য সূত্রে এঘটনায় দুলাল শেখ জানান বাদী ও আসামীদ্বয় একই গ্রামের পূর্ব পরিচিত বটে। বাদী ও ১নং আসামী ইব্রাহিম দুজনে সাউথ আফ্রিকা থাকা অবস্থায় ১নং আসামী ইব্রাহিম বাদীকে সাউথআফ্রিকায় যৌথ ভাবে ব্যবসা করার প্রস্তাব দেয়। বাদী প্রথমে রাজী না হইলেও পরবর্তীতে বাদী তাহার পরিবার পরিজনও আত্মীয় স্বজনের সাথে আলাপ করিয়া এবং ২নং আসামী দেশে বাদীর পরিবারের লোকজনকে অনুনয় বিনয়ের কারনে বাদী ১নং আসামীর সাথে সাউথ আফ্রিকায় জোহানেসবার্গ শহরে যৌথ ভাবে ব্যবসা করিতে রাজী হয়। অতঃপর ১নং আসামীর কথামত ১ম ঘটনার দিন তারিখ ও সময়ে অর্থাৎ ১৩/০৮/২০১৫ইং তারিখে ২নং আসামী সেরাজল শিকদার মুন্সীগঞ্জ থানাধীন ভট্টাচার্য্যের বাগ সাকিনস্থ বাদীর বসত বাড়ীতে আসিয়া ২ ও ৩নং সাক্ষীর সম্মুখে বাদীর পিতার নিকটি থেকে ২নং আসামী সেরাজল শিকদার নগদ ৮ লক্ষ টাকা গ্রহন করে। বাদী ১নং আসামীর কথামত সরল বিশ্বাসে তাহার পিতার মাধ্যমে ২নং আসামীর কাছে নগদ ৮,০০,০০০/- টাকা প্রদান করে। অতঃপর উক্ত স্থানে বাদী ও ১নং আসামী সাউথ আফ্রিকায় থাকাবস্থায় ১নং আসামী বাদীকে ব্যবসার বিষয়ে কোন কিছু না জানানোর কারনে বাদী আসামীর নিকট ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে আসামী বিভিন্ন
তালবাহানা করিয়া ঘুরাইতে থাকে। অতঃপর আসামী বাদীর দেওয়া টাকা আত্মসাত করার অসৎ উদ্দেশ্যে বাদীকে চক্রান্ত করিয়া সাউথ আফ্রিকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী লোকজন দিয়া এস,এস লোহার পাইপ দিয়া মারপিট করিয়া জখম করে এবং সাউথ আফ্রিকা হইতে বাংলাদেশে চলিয়া যাইতে হুমকী দেয়। তা না হইলে যে কোন সময় সাউথ আফ্রিকায় ১নং আসামী বাদীকে প্রানে মারিয়া ফেলিবে। অতঃপর বাদী নিরুপায় হইয়া ১নং আসামীর ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত্র হইয়া বাংলাদেশে চলিয়া আসে। বাদী বাংলাদেশে আসার পর বাদী ও তাহার পরিবারের লোকজন সাক্ষীগন ২নং আসামীর কাছে বহুবার বাদীর তাহার পাওনা ৮ লক্ষ টাকা ফেরত চাইলে ২নং আসামী বাদীকে বিভিন্ন রকমের কথাবার্তা বলিয়া তালবাহানা করিয়া ঘুরাইতে থাকে। ইতিমধ্যে ১নং আসামী ইব্রাহিম সাউথ আফ্রিকা হইতে বাংলাদেশে আসে। বাদী এই খবর পাইয়া বিগত ২৮/০৪/২০২৫ ইং তারিখ সকাল অনুমান ১০.৩০ ঘটিকার সময় বাদী সাক্ষীদের নিয়া আসামীদের বাড়ীতে যাইয়া ১ ও ২নং আসামীর নিকট বাদীর তাহার পাওনা টাকা বাদীপক্ষ ফেরত চাহিলে আসামীদ্বয় সাক্ষীদের সম্মুখে বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বলে যে, আমরা তোর নিকট হইতে ব্যবসার জন্য কোন টাকা নেই নাই বলিয়া ৮ লক্ষ টাকা নেওয়ার বিষয় সম্পূর্নরুপে অস্বীকার করে। ২নং আসামী বাদীকে বলে ভবিষ্যতে টাকা চাইতে আসলে কিংবা এই বিষয়ে কোন মামলা মোকদ্দমা করিলে তোকে ও তোর পরিবারের লোকজনদেরকে খুন করিয়া ফেলিব বলিয়া হুমকী প্রদান করে। ১ ও ২নং আসামী পরস্পর যোগসাজসে বাদীর নিকট হইতে ব্যবসার করার কথা বলিয়া ৮ লক্ষ টাকা নিয়া উক্ত টাকা আত্মসাত করিয়া বাদীর সাথে অপরাধ করিয়াছে। বাদী যদি প্রতারনা ও বিশ্বাস ভঙ্গ করিয়া শাস্তিযোগ্য ইতিপূর্বে জানতো যে, আসামীদ্বয় বাদীর সাথে উক্তরুপ কার্য করিবে তাহা হইলে বাদীপক্ষ আসামীকে সরল বিশ্বাস করিয়া কখনোই ৮ লক্ষ টাকা প্রদান করিত না। বাদীর উক্ত ঘটনার বিষয়ে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে পরামর্শ করিয়া থানায় গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়া মাননীয় আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেওয়ায় বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করিতে বিলম্ব হইল। ঘটনা প্রমানে সাক্ষী আছে।
এবিষয়ে মুন্সিগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে বাদীর অভিযোগ আমলে তারিখে ২২/০৫/২০২৫ইং গ্রহন করিয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করিয়া পুলিশ কর্তৃক আনিয়া সুবিচার দায়ের করেন ।