স্টাফ রিপোর্টারঃ নারায়ণগঞ্জের বন্দরের যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ এর অন্যতম ৪ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে বন্দর থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো যুবলীগ নেতা জাহিদ (২৬), শাওন (২৪), ইয়াসিন (২৩), ও আফজাল হোসেন (৩০)। গত ১৬ ও ১৮ আগস্ট মদনপুরের ফুলহর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের গ্রেপ্তারে ফুলহর এলাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত হোসেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বন্দর থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ফুলহর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। পতিত সরকারের আমলে নাশকতা করার অভিযোগে আফজাল, জাহিদ, শাওন, ইয়াসিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
বন্দর থানায় তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে একটি মামলায় তাদেরকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ধামগড়, মুছাপুর, মদনপুর ইউনিয়ন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৬ ও ২৭নং ওয়ার্ড এলাকা অর্থাৎ বন্দরের উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছিল যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদের হাতে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় গত বছরের ৪ আগস্ট দুপুরে কেওঢালা ও মদনপুর এলাকায় যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও গুলিবর্ষণে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছিল কমপক্ষে ৩০ জন । গুলিবিদ্ধ এক শিক্ষার্থীর নাম আল আমিন (১৭)। সে মদনপুর রিয়াজুল উলুম আলিম মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার পিতার শাহ আলম গাজী, চাঁনপুর হালিম মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।
আহত শিক্ষার্থী আল আমিন জানান, গত ৪ আগস্ট সকাল ১০টা থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর বাসস্ট্যান্ড ফুটওভার ব্রিজের নিচে অবস্থান করেছিলাম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা একত্রিত হয়ে একটি মিছিল নিয়ে মহাসড়কের কেওঢালা বেঙ্গল বিস্কুট ফ্যাক্টরির সামনে পৌঁছাই। এ সময় যুবলীগ নেতা অহিদের নেতৃত্বে কয়েকশ’ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা ও প্রকাশ্যে গুলি ছুঁড়ে। এসময় আমি সহ দুইজন গুলিবিদ্ধ হই, আহত হয় বহু। আহতদের স্থানীয় কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। এছাড়াও ওইদিন আন্দোলনকারীদের সহযোগিতা করার অভিযোগে অহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে মদনপুর এলাকার ব্যবসায়ী আবু বক্কর সিদ্দিক এর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়াও ওই সময় বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম ভুঁইয়া হীরন, বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি সদস্য নূর নবী, মদনপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা দিপু ভুইয়ার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় অহিদুজ্জামান অহিদ। তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৭টি মামলা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে অহিদ পালিয়ে গেলেও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী বিএনপি নেতার ছত্রছায়ায় অহিদুজ্জামানের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা এখনো এলাকায় রয়ে গেছে।