মোঃ আবু কাওছার মিঠু রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সরকারি মুড়াপাড়া কলেজের একাদশ শ্রেণির(বিএম) ছাত্রী মাহিয়া আক্তার(১৮) আইফোন কেনার জন্য সে নিজেই তার অপহরণ ও গণধর্ষণের নাটক সাজিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ২৪জুলাই বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জ থানায় আয়োজিত ওসি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাহিয়া আক্তারের দুই সহপাঠী প্রতারক সিফাত মিয়া(১৯) ও সিনথিয়া আক্তারকে(১৮) আটক করেছে পুলিশ। মাহিয়া আক্তার উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মঙ্গলখালী গ্রামের মাহবুব আলমের মেয়ে।
সিফাত মিয়া ও সিনথিয়া আক্তারের বাড়ি ভুলতা ইউনিয়নের পাড়াগাঁও গ্রামে। সংবাদ সম্মেলনে রূপগঞ্জ থানা ওসি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৩ জুলাই বুধবার সরকারি মুড়াপাড়া কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মাহিয়া আক্তার ১লাখ টাকা মুক্তিপনের জন্য অপহরণ ও গণধর্ষণের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মাহিয়া আক্তারের মা নাসরিন আক্তার বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুলিশ মাহিয়া আক্তারকে উদ্ধার করে প্রথমে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশ জানায়, মাহিয়া আক্তার আইফোন কেনার জন্য গত কয়েকদিন ধরেই তার বাবা-মায়ের কাছে দাবি করে আসছিলো। বাবা-মা আইফোন ক্রয় করে দিতে অপরগতা প্রকাশ করে। পরে মাহিয়া আক্তার তার সহপাঠী সিফাত মিয়া ও সিনথিয়া আক্তারের সঙ্গে পরিকল্পনা শেষে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের ছক করে। সে অনুযায়ী গত ২২জুলাই মঙ্গলবার সকালে কলেজে যাওয়ার কথা বলে মাহিয়া আক্তার বাসা থেকে বের হয়। দুপুরের দিকে তার সহপাঠী সিফাত মিয়া মুক্তিপণের এক লাখ টাকা দাবিতে মাহিয়া আক্তারের মাকে ফোন করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে মেয়েকে গণধর্ষণ করা হবে বলে তার মাকে হুমকি দেয়। এদিকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে মাহিয়া আক্তার তার সহপাঠী সিনথিয়াদের বাড়িতে গত ২২জুলাই মঙ্গলবার রাত্রিযাপন করে।
গত ২৩জুলাই বুধবার সারাদিনেও বাবা-মায়ের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা না পেয়ে ঘুমের ঔষধ সেবন করে মাহিয়া আক্তার মুড়াপাড়া কলেজের পেছনে গিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এসময় দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় মাহিয়া আক্তারকে নির্যাতন করে মুড়াপাড়া কলেজের পেছনে ফেলে রাখা হয়েছে বলে সিফাত মিয়া সহপাঠী মাহিয়া আক্তারের বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দেয়। পরে পুলিশ মাহিয়া আক্তারকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। মাহিয়া আক্তার এখন বিপদমুক্ত। রূপগঞ্জ থানা ওসি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম আরো বলেন, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আটককৃত সিফাত মিয়া ও সিনথিয়া আক্তারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।