মোঃ সাকিব খান মাগুরা জেলা প্রতিনিধি: মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নোহাটা উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর বিরুদ্ধে চতুর্থ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে শ্রীপুর থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। এ ঘটনা উপজেলা ব্যাপী ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ জনগণ। বিভিন্ন মহলে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি উঠেছে। এ ঘটনায় রবিবার (৬ মে) ঐ শিক্ষককে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে শ্রীপুর সরকারি কলেজের সামনে মানববন্ধন করেছে শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদল, সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদল, সাধারণ শিক্ষার্থী ও শ্রীপুর উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ। মানববন্ধনে শিশু আছিয়ার ঘটনাকে তুলে ধরে একই ইউনিয়নে আবারো এরকম একটি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অভিযুক্ত ঐ শিক্ষককে দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান বক্তারা।
এসময় মানববন্ধন শেষে শ্রীপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বাবলু মিয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাখী ব্যানার্জীর কাছে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবিতে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়। সরকারি কলেজ ছাত্রদল কর্মী লিমন খাঁন বলেন, শ্রীপুরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে নোহাটা উত্তরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটো ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলো। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই এবং সুষ্ঠু বিচার চাই। আরেক খন্দকার তালহা উদ্দিন সান বলেন, শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রদলের আজকে এই মানববন্ধন থেকে আমরা প্রশাসনের কাছে আশা করি এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে বিচার করা হোক।
যেন আর কোনো এই রকম ঘটনা না ঘটে। মানববন্ধনে শ্রীপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোঃ ইমরান বলেন, ধর্ষকের কোন পরিচয় নেই, ধর্ষকের একটিই পরিচয় সে নিকৃষ্ট ব্যক্তি। আমরা শ্রীপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এই ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের দাবি করছি। এ সময় উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ন আহ্বায়ক সাহেব আলী খন্দকার বলেন, ধর্ষণের চেষ্টাকারী কিভাবে একটা স্কুলের শিক্ষক হয়? আমরা আমাদের বাচ্চাদের মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকদের হাতে ছেড়ে দিই। সেখানে সেই শিক্ষক যদি ধর্ষক হোন তাহলে আমাদের সন্তানের নিরাপত্তা কোথায়? ছাত্রদল কর্মী রিফাত বলেন, শিক্ষক যদি ধর্ষক হয় তাহলে আমরা কোথায় যাবো? একটা শিশু মায়ের পরে শিক্ষকের কাছেই সর্বোচ্চ নিরাপদ।
সেখানে যদি শিশুরা ধর্ষণের শিকার হয়। আমরা এই ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। শ্রীপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অন্তর বলেন, বার বার একই এলাকায় শিশু ধর্ষণের শিকার হচ্ছে আছিয়ার বাড়ি সব্দালপুর ইউনিয়নে। আপনারা অবগত হয়েছেন চতুর্থ শ্রেণীর একজন ছাত্রী তার বয়স কতই বা হবে। বারবার কেন এই নেককার জন্য ঘটনা সাক্ষী আমাদের শ্রীপুরবাসীর হতে হচ্ছে? মাগুরাতে আলোচিত ধর্ষণের শিকার আছিয়ার বাড়ি এই সব্দালপুর ইউনিয়নে।
সেই হিটো থেকে টিটো প্রত্যেকটা ধর্ষকের অবিলম্বে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তুহিন আহম্মেদ বলেন, সহকারী শিক্ষক দ্বারা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী যে যৌন নিপিরণের শিকার হয়েছে। তার সঠিক বিচার আমরা দাবি করছি। আমরা আমাদের সন্তানদেরকে শিক্ষকের কাছে লালন পালনের জন্য দিই। আজকে সেই রক্ষকই ভক্ষক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাহলে এই সন্তানদের নিরাপত্তা কোথায় এখন? এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর নাম উল্লেখ করে ধর্ষণ চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে ২ মে শুক্রবার রাতে শ্রীপুর থানায় একটি নিয়মিত মামলা করে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর চাচা রেজাইল মৃধা ও মা রুমি বেগম। উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারা মোতাবেক থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। যার মামলা নং- ০৩। এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান টিটোর মুঠোফোনে একাধিক যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।