সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জে কয়েকটি উপজেলা সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে দেশীয় চোলাই ও ভারতীয় মদের দিন দিন বিস্তার ঘটে যাওয়াতে বর্তমান প্রজন্মের ছেলেদের নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন তাদের অভিভাবকরা। এই মাদকের বিরুদ্ধে যেখানে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুনামগঞ্জে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর রয়েছেন সেখানে দুয়েকজন র্দূনীতিবাজ মাদক কর্মকর্তার নিয়মিত উৎকোচ ও মাসোয়ারার কারণে মাদকের বিস্তার নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছেনা বরং তা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। সুনামগঞ্জে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে এক মাদক কারবারীর উৎকোচের কথোপকথোনের এমন একটি অডিও রেকর্ড সংবাদকর্মীদের হাতে রয়েছে। এই কর্মকর্তা হচ্ছেন সুনামগঞ্জ মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিদর্শক আব্দুল কাদির । সরকারী চাকুরীর ম্যানুয়েলে একটি জেলায় কোন কর্মকর্তা কর্মচারীর তিন বছরের অধিক থাকার কোন বিধান না থাকলে ও এই কর্মকর্তা প্রায় ৫ বছর ধরে সুনামগঞ্জ জেলায় মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরে বহাল তবিয়তে থেকে জেলার তাহিরপুর,দিরাই পৌর পয়েন্টে,শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া,সদর উপজেলার সুরমা ইউপির ইব্রাহিমপুরে, মঙ্গলকাটা বাজারে অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে রয়েছে তার নিবিড় সম্পর্ক। প্রতিমাসে একেকজন মাদক ব্যবসায়ীর নিকট হতে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকাে অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন বলে জানা যায়।
এমনি করে জেলার ৪০ থেকে ৫০ জন মাদক কারবারীর নিকট হতে মাসে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে সুনামগঞ্জ মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সহকারী উপ পরিদর্শক পদে মোঃ আব্দুল কাদির ২০১৯ সালে যোগদান করেন । অপরদিকে গত ৮ ডিসেম্বর (রোজ রবিবার) বিকেলে সদর উপজেলার সুরমা ইউপির ইব্রাহিমপুর গ্রামের মাদক কারবারী রাজু মিয়ার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করতে যান সুনামগঞ্জ মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের সহকারী উপ-পরিদর্শক আব্দুল কাদির সহ আরো কয়েকজন । এ সময় তারা মাদক ব্যবসায়ী রাজু মিয়ার নিকট হতে র টাকা গ্রহন করেন এমন কথোপকথোনের একটি অডিও রেকর্ড ফাসঁ হয়ে যায়। স্থানীয় ইব্রাহিমপুরের মাদক কারবারী রাজু মিয়া জানান,গত ৮ডিসেম্বর মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের সহকারী উপ পরিদর্শক আব্দুল কাদিরসহ কয়েকজন তার বাড়িতে যান অভিযান পরিচালনা করতে । এ সময় তিনি (রাজু মিয়া) বাড়িতে না থাকায় তার পিতা আব্দুল কাদিরকে খরচের টাকা না দিলে মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখান। এ সময় রাজু মিয়া ঘটনাটি জানতে পেরে ইব্রাহিমপুর গ্রামের একজনের মাধ্যমে এই কর্মকর্তাকে খরচ বাবত সাড়ে ৩ হাজার টাকা দেন বলে তিনি সংবাদকর্মীদের নিকট স্বীকার করেন।
এদিকে চলতি বছরের গত ২৪ নভেম্বর দোয়ারাবাজারের কাটাখালি থেকে একটি ব্যক্তি বেনামী মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর ঢাকা বরাবরে সুনামগঞ্জের এই সহকারী উপ পরিদর্শক আব্দুল কাদিরের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,২০২৩ সালের ২রা নভেম্বর দোয়ারাবাজার উপজেলার মাসুদ আলম সুজন নামে এক নিরীহ ব্যক্তিকে ফাাঁসনোর জন্য সদর উপজেলার থেকে ১০০ পিস ইয়াবাসহ তাকে ডিবি পরিচয়ে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের সহকারী উপ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল কাদির আটক করেন এবং পরবর্তীতে তাকে কোন
অভিযোগ ছাড়াই ছেড়ে দেন বলে এই অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়। এদিকে গত ৯ ডিসেম্বর ইব্রাহিমপুর গ্রামের আরেক মাদক কারবারী নূর হোসেনের বাড়িতে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন মাদক অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের উপ পরিদর্শক আদনান রিফাতের নেৃতৃত্বে প্রতিষ্ঠানের সহকারী উপ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল কাদির,সহাকরী উপ- পরিদর্শক মনিতা সিনহা ও তিনজন সিপাহী । এ সময় তারা বেশ কয়েক বোতল বিদেশী ভারতীয় মদসহ মাদক কারবারী নূর হোসেনকে আটক করে মামলা দিলেও মামলাটি হালকা করে দিবে বলে তাৎক্ষনিক তার নিকট হতে অনৈতিক সুবিধা গ্রহন করেন বলে ও জানা যায়।
এদিকে একাধিক মাদক কারবারীদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাদের নিকট হতে নামাংঙ্কিত কর্মকর্তা প্রতিমাসে একটা নির্ধারিত মাসোয়ারা গ্রহন করেন থাকেন। টাকা না দিলে মামলার ভয়ভীতি দেখানো হয় । ্ধসঢ়;এ ব্যাপারে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের সহকারী উপ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল কাদিরের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মাদক কারবারী রাজু মিয়ার নিকট হতে অনৈতিক সুবিধা গ্রহনের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে দোয়ারাবাজারের মাসুদ আলম সুজনকে ইয়াবা সহ আটক ও পরবর্তীতে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি তার ভগ্নিপতি তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল বলে জানান। এ ব্যাপারে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের সহাকারী পরিচালক নাহিদ হাসান সৌরভ জানান,আমি নতুন যোগদান করেছি সুনামগঞ্জে। ইতিমধ্যে আব্দুল কাদির ও মনিতা সিনহা তিনবছরের অধিক সময় ধরে কিভাবে সুনামগঞ্জে কর্মরত রয়েছে এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ইতিমধ্যে আমাদের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর সিলেট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মিজানুর রহমান পাটোয়ারী জানান,আমাদের অধিদপ্তরে যে কেহ তিনবছরের অধিক থাকতে পারেন না। কিন্তু কেন ঐ জয়াগাতে কর্মরত আছেন সেটা জানা নেই। তবে কেউ মাদক অভিযানের নামে মাদক কারবারীদের নিকট হতে অনৈতিক সুবিধা নিবে প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।