স্টাফ রিপোর্টারঃ- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক কাস্টমস কমিশনার জনাব হাফিজুর রহমানকে ২০১৪ সালে অবৈধ সম্পদ অর্জন সহ কতিপয় অসত্য অভিযোগের ভিত্তিতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আলোচ্য বিষয়ে সাবেক কাস্টমস কমিশনার জনাব হাফিজুর রহমান এর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দূর্নীতি দমন কমিশন হতে তদন্ত করে প্রমানিত না হওয়ায় তাকে উক্ত অভিযোগ হতে অব্যাহতি প্রদান করে ১৫/০৩/২০১৬ তারিখে চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সহ সচিব, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ/সচিব, জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়কে অবহিত করেন। দুদক কর্তৃক অব্যাহতির বিষয়টি জ্ঞাত থাকার পরেও তৎকালীন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান ২৮/০৯/২০১৬ তারিখে সাবেক কাস্টমস কমিশনার জনাব হাফিজুর রহমানকে চাকরি হতে বরখাস্ত করেন। উক্ত বরখাস্তের প্রেক্ষিতে সংক্ষুব্ধ হয়ে জনাব হাফিজুর রহমান মাননীয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা (এ. টি কেইস নং-231/2019) দায়ের করেন। যার শুনানীঅন্তে উক্ত বরখাস্ত আদেশ বাতিল করে জনাব হাফিজুর রহমান কে চাকুরিতে সিনিয়রিটি ও কন্টিনিউটি সহ কমিশনার পদে পুন: বহালের আদেশ প্রদান করা হয়। উক্ত আদেশের বিপরীতে সরকার পক্ষ প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে আপীল নং- ৯২/২০২০ দায়ের করেন। যার শুনানীঅন্তে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল মামলাটি খারিজ করে দেন। উক্ত খারিজ আদেশের প্রেক্ষিতে সরকার পক্ষ মাননীয় সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে সিভিল পিটিশন ফর লীভ টু আপিল নং- ২২৮১/২০২০ দায়ের করেন। যার শুনানীঅন্তে মাননীয় আপিল বিভাগ সময়বারিত (Time Barred) বিধায় আপিল মামলাটি ডিসমিস করে দেন। উক্ত আদেশ প্রাপ্তির ০৭ (সাত) মাস পরে রিভিউ করা যাবে কিনা তা জানতে চেয়ে আইন মন্ত্রনালয়ে পত্র প্রেরন করলে আইন মন্ত্রনালয় মতামতের জন্য বিষয়টি বিজ্ঞ এ্যাটর্নি জেনারেল দপ্তরে প্রেরন করেন। এ প্রেক্ষিতে উক্ত বিষয়ে রিভিউ করলে আইনি প্রতিকার পাওয়া যাবে না মর্মে বিজ্ঞ এ্যাটর্নি জেনারেল অভিমত প্রদান করেন। বিজ্ঞ এ্যাটর্নি জেনারেল এর এই মতামত প্রদানের ০৬ (ছয়) মাস পর আবারও আইন মন্ত্রনালয় বরাবরে এ্যাডভোকেট অন রেকর্ড নিয়োগ করে রিভিউ পিটিশন দায়ের করার সুপারিশ করেন। এ্যাডভোকেট অন রেকর্ড এই ব্যাপারে পুনরায় বিজ্ঞ এ্যাটর্নি জেনারেলের মতামত নেন যা ছিলো: “রিভিউ দায়ের করা হলে ফল লাভের সম্ভাবনা নাই এবং সরকারের অর্থ ও মূল্যবান সময়ের অপচয়ের আশঙ্কা রয়েছে”। মাননীয় উচ্চ আদালতের আদেশ মোতাবেক জনাব হাফিজুর রহমান এর চাকুরিতে পুন:বহালের আবেদনের পর রিভিউ পিটিশন দায়েরের জন্য প্রথমবারে ০৭ (সাত) মাস কালক্ষেপন এবং দ্বিতীয়বারে পুনরায় ১০ (দশ) মাস কালক্ষেপন করা হয়েছে। বিজ্ঞ এ্যাটর্নি জেনারেল দপ্তরের উক্ত মতামত প্রেরনের পরেও জনাব হাফিজুর রহমান এর চাকুরির মেয়াদ তিন মাস অবশিষ্ট ছিলো। তথাপিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান জনাব আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম, তৎকালিন এনবিআরের চেয়ারম্যান জনাব নজিবুর রহমান সহ আইআরডির সাবেক যুগ্ম সচিব সুরাইয়া পারভীন শেলী/জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক প্রথম সচিব মো: ইদতাজুল ইসলাম ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রায়হানুল ইসলাম ভূইয়ার ইন্ধনে/যোগসাজশে কাস্টমস কমিশনার জনাব হাফিজুর রহমানকে উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে চাকুরির মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ার পর অর্থাৎ অবসর সীমা ৩১/১০/২০২৩ তারিখ পরবর্তীতে ভূতাপেক্ষ ভাবে অতিরিক্ত কমিশনার পদে পুন: বহাল করা হয় এবং ভূতাপেক্ষ অবসর প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে মাননীয় উচ্চ আদালতের আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করে আংশিক পরিপালন করে ভুতাপেক্ষ ভাবে পুন:বহাল করা হয়েছে কিন্তু আদালতের রায় অনুযায়ি সিনিয়রিটি ও কন্টিনিউটি সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়নি বিধায় জনাব হাফিজুর রহমানের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে।মাননীয় উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে ইচ্ছাকৃত কালক্ষেপন তথা আদেশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করে আংশিক পরিপালন করত: চাকুরিতে ভূতাপেক্ষ পুন: বহাল করায় এবং সিনিয়রিটি ও কন্টিনিউটি সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদান না করায় বিজ্ঞ ৩য় যুগ্ম জেলা জজ আদালত ঢাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব আবু হেনা মো: রহমাতুল মুনিম সহ কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক ক্ষতি সহ মানহানির ক্ষতি বাবদ প্রায় ১৫ (পনেরো) কোটি টাকার ক্ষতিপূরন মামলা মানি মোকদ্দমা নং-৩০/২০২৪ দায়ের করা হয়েছে। যার প্রাথমিক শুনানীঅন্তে মামলাটি গ্রহন পূর্বক 12/03/2025 তারিখে পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য্য করা হয়েছে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিম এর সাথে একাধিক বার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।