লক্ষ্মপুর প্রতিনিধি: আজ ডায়েরির পাতায় লিখছি, তোমাকে উদ্দেশ্য করে। হয়তো এই লেখা তোমার কাছে কোনোদিন পৌঁছাবে না, তবু মনটা হালকা করার জন্য লিখছি। সেদিনের কথা মনে আছে তো? আমি আর আমার পরিবার তোমাদের বাড়ি গিয়েছিলাম। প্রথমবার তোমাকে দেখে মনে হয়েছিল—এই মেয়েটিই আমার জীবনের সঙ্গী হতে পারে। তোমার শান্ত চোখ, ভদ্রতা, আর লাজুক হাসি আজও চোখে ভাসে। সেদিন আমরা অল্প কিছু কথা বলেছিলাম। কিন্তু সেই সামান্য সময়েই আমি বুঝেছিলাম, তুমি আর আমি যেন বহুদিনের পরিচিত। হয়তো এটাই ছিল ভাগ্যের খেলা। কিন্তু ভাগ্য আমাদের খেলাতেই হারিয়ে দিল। তোমার মা যখন বললেন, আমি আমার মেয়ে দেবো না একজন সাংবাদিককে।
সংসার চালাতে টাকার দরকার, নাম-যশে পেট ভরে না। তখন মনে হলো যেন কেউ আমাকে ভিতর থেকে ভেঙে দিল। আমি চুপ করে ছিলাম, শুধু তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তোমার চোখে জমে থাকা জল আমি দেখেছিলাম, কিন্তু কিছুই বলতে পারিনি। শিমু, আমি জানি তোমার অপরাধ নেই। এই সমাজ, এই পরিবার, টাকার হিসাব—সবকিছু আমাদের সত্যিকারের ভালোবাসার সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ আমি সাংবাদিক হয়েই আছি, মানুষের গল্প লিখি, অন্যের কষ্ট তুলে ধরি। কিন্তু নিজের কষ্টটা লিখতে পারি না কোথাও—শুধু এই ডায়েরির পাতায় লুকিয়ে রাখি। তুমি এখন অন্য জীবনে আছো, হয়তো সুখীও। আমি চাই তুমি সুখী হও। কিন্তু জানো শিমু, আমার ভেতরের শূন্যতা আজও তোমার নামেই পূর্ণ। শিমু আর শিমুলের গল্পটা ছিল ভালোবাসার, কিন্তু হেরে গেল টাকার কাছে। আমি বলি না, এটা টাকার কাছে হার নয়, এটা আমাদের সমাজের কাছে হার।