সাজ্জাদ আহমেদ মাসুদ, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তুলারাম গ্রামে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় আলামিন গাজী (৪৫) নামে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয়রা পানপট্টির তুলারাম গ্রামের মিজান মিয়ার ঘেরপাড়ে একটি গাছে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। উদ্ধারকৃত আলামিন গাজীর বাড়ি খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার কালেখারবেড় গ্রামে। তার বাবার নাম মিজান গাজী ও মায়ের নাম নাছিমা বেগম। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাতটর দিকে স্ত্রী নাজমা বেগমকে (৪৫) অটো রিকশায় ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে নিয়ে যায় আল আমিন।
পরে পানপট্টি ইউনিয়নের বাঁশতলা এলাকায় কাজী বাড়ির সামনের রাস্তায় গেলে নাজমাকে ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান তিনি। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় নাজমাকে উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন। অন্যদিকে, ঘটনার পর আল আমিনের অটো রিকশাটি পানপট্টি বোয়ালিয়া বেড়িবাঁধের পূর্বপাশে গাজী বাড়ির সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বিধ্বস্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতের পর থেকে আল আমিন নিখোঁজ ছিলেন। ঘটনার এক রাত পর মঙ্গলবার সকালে পানপট্টির তুলারাম গ্রামের মিজান মিয়ার ঘেরপাড়ে একটি গাছে আল আমিনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়।
স্থানীয়রা আরও জানায়, নাজমা বেগমের বাবার নাম জলিল মিস্ত্রী (বিশ্বাস)। তিনি পানপট্টি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও নাজমা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশতলা এলাকায় বসবাস করতেন। মুরগির ফার্ম পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। নাজমার এর আগেও দুটি বিয়ে হয়েছিল। প্রথম স্বামীর ঘরে তার এক ছেলে সজল (২২) ও এক মেয়ে তুলি (১৮) রয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে নাজমা ও আল আমিনের বিয়ে হয়। চার বছর আগে কাজের সূত্রে বাগেরহাট থেকে গলাচিপায় আসেন আল আমিন। গলাচিপায় প্রায় দুই বছর কাজ করে তিনি (আল আমিন) নিজ বাড়ি খুলনায় ফিরে যান। তবে এর মধ্যে নাজমার সঙ্গে পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সেই সূত্রে ফিরে এসে তাদের বিয়ে হয় এবং একসাথে সংসার করছিল। এরমধ্যে নাজমার প্রথম স্বামীর ছেলে সজল আল আমিনের জন্য একটি অটো রিকশা কিনে দিয়েছিল, যা চালিয়েই তাদের সংসার চলছিল। গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ আশাদুর রহমান বলেন, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে তার স্ত্রী নাজমাকে গতকাল সন্ধ্যায় ঘুরতে নিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এর পর মঙ্গলবার সকালে আল আমিনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গলাচিপা থানায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। আল আমিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াাখালী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্তের পর ঘটনার মটিভ জানানো হবে।