গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ- পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ২ নং গোলখালী ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের গোলখালী গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ তিনজন আহত হয়েছেন এবং হামলাকারীরা বিভিন্ন প্রজাতির দুই শতাধিক ফলন্ত কলাগাছ, ফলজ বৃক্ষ ও বিভিন্ন প্রজাতির কাঠ গাছ কেটে বিনষ্ট করেছে। এ ঘটনায় ঐ দিনই ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান (৪২) বাদী হয়ে একই এলাকার জয়নাল হাওলাদার এর দুই ছেলে জাহাঙ্গীর হাওলাদার (৫৫) ও হারুন হাওলাদার (৫৭), জাহাঙ্গীর হাওলাদার এর ছেলে ও গোলখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মাসুদ হাওলাদার (২৭), কদম আলী প্যাদার ছেলে জাকির প্যাদা (৩৫) ও সুলতান হাওলাদারের ছেলে হানিফ হাওলাদার (৪০) কে আসামী করে গলাচিপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার সিরিয়াল নং-১৮৩৭/২৫।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান জানায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিবাদী পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিজানুর রহমানের বসত ঘরের সামনে তার পৈত্রিক ওয়ারিশি সম্পত্তি জোরপূর্বক চাষাবাদ করতে আসে, এতে মিজানুর রহমান বাধা দিলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি ভাবে মারধর করে, হামলাকারীদের হাত থেকে মিজানুর কে রক্ষা করতে তার মা ও স্ত্রী ছুটে আসলে তাদেরকে ও সন্ত্রাসীরা মারধর করে এবং মিজানুরের স্ত্রী’র জামা কাপড় টেনে ছিড়ে ক্ষতবিক্ষত করে শ্লীলতাহানি হানি করে মিজানুর কে অচেতন অবস্থায় কাদা পানির মধ্যে পুঁতে রেখে মিজানুরের পরিবারের সকল সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়ে তারা দুই শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির ফলন্ত কলাগাছ, ফলজ বৃক্ষ এবং কয়েক প্রকার কাঠগাছ কেটে বিনষ্ট করে চলে যায়। এলাকাবাসী এসে আহতদের উদ্ধার করে গলাচিপা স্বাস্থ্য ভর্তি করে।
এ হামলায় মোঃ মিজানুর রহমান (৪২), মিজানুরের স্ত্রী মোসাঃ আসমা আক্তার (২৮), মিজানুরের মা মোসাঃ হেনোয়ারা বেগম (৬৫) সহ মোট তিন জন আহত হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং বর্তমানে তারা গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন আছেন।
এছাড়া, ভুক্তভোগীর স্ত্রী আসমা আক্তারের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, কানের দুল এবং মিজানুর রহমানের হাতে থাকা একটি স্মার্টফোন ছিনিয়ে নিয়েছে হামলাকারীরা।
ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান আরও বলেন, বিবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে শত্রুতা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সেদিন প্রকাশ্যে তাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জেরে বেশ কয়েকবার উত্তেজনা দেখা দিলেও এবার প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালানো হয়েছে, যা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
হামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, আমার গাছ আমি কাটছি, এতে দোষের কি আছে।
ইউপি সদস্য গাজী সালাউদ্দিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী কেউই আমাকে কিছু জানায় নাই, আপনাদের মাধ্যমে শোনার পরে সরজমিন পরিদর্শন করেছি, এধরণের হীন কাজের সাথে জড়িতদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।
গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মাসুদ রানা’র সাথে একাধিক বার চেষ্টা করেও না পেয়ে তার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশাদুর রহমান বলেন, “লিখিত অভিযোগ আমরা হাতে পেয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।