স্টাফ রিপোর্টারঃডিক্রিরচরে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপনের কয়েকদিনের চেষ্টার পর নতুন চালু হওয়া অপটিক্যাল ফাইবার লাইনে নাশকতার অভিযোগ উঠেছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর সামিট গ্রুপের মাধ্যমে লক্ষীনগর তারু মার্কেট থেকে ডিক্রিরচর পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন ফাইবার টানা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল এলাকাবাসীর জন্য উন্নত ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু চালুর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার কেটে ফেলা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ১৮ মিনিটের দিকে হঠাৎ লাইন ডিসকানেক্ট হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে দুইজন কর্মী ঘটনাস্থলে গেলে তারা গঙ্গানগর ব্রিজ এলাকায় কয়েকজনকে তার কেটে নিতে দেখতে পান। অভিযোগ অনুযায়ী, তাদের সামনেই কথিত বিএনপি নেতা ফয়সাল, মা’দকাসক্ত ও চিহ্নিত তার চোর নাঈম, উজ্জ্বল ও এক অজ্ঞাত সহযোগী তার নিয়ে পালিয়ে যায়। এতে শুরু হয় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া।
লক্ষীনগর পশ্চিমপাড়ায় উভয় পক্ষের গাড়ি থামালে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়। কর্মীদের অভিযোগ, ফয়সাল গাড়ি থেকে নেমে প্রাণনাশের হু’মকি দেয়। তিনি বলেন—“কিরে ভিডিও করতেছিস কেন? যেই দিক দিয়া আসছিস ওই দিক দিয়াই চলে যা, না হলে এই র’ড গলা দিয়া ঢু’কাইয়া দিমু।”
ঘটনার পর নাঈম দাবি করে সে বাসায় ছিল। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়, সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং তার কাটায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। উজ্জ্বল প্রথমে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলে—“ফয়সাল ভাই আমাকে তারটা নিতে বলে, তারপর গাড়িতে তোলে।” তবে অপর একটি সিসিটিভি ভিডিওতে দেখা যায়, উজ্জ্বল পুরো ঘটনায় সহযোগিতা করেছে এবং তার চুরির চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো—অভিযুক্ত ফয়সাল নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করলেও বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তার সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং তিনি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যবসা দখলের সঙ্গে জড়িত। খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর নিজেকে ‘ত্যাগী নেতা’ দাবি করে বক্তাবলী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ইন্টারনেট ব্যবসা দ’খল করে নিচ্ছেন ফয়সাল।
এলাকাবাসীর দাবি, রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে যারা নাশকতার সাথে জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। তাদের মতে, ডিক্রিরচরের ইন্টারনেট সেবার উন্নয়ন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের কারণে মারাত্মকভাবে বা’ধাগ্রস্ত হচ্ছে।