লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ২নং হামসাদী ইউনিয়নের মরহুম বেপারী বাড়িতে চলছে এক বাল্যবিবাহের প্রস্তুতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই বাড়ির কিশোরী আসিফা আক্তার (১৫) পিতা আব্দুল হাই ও মাতা শিমা আক্তারের একমাত্র মেয়ে।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, বামনি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন স্যার নিজেই এই বিয়ের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, বাবনি হাই স্কুলের হুমায়ুন স্যার বলেন, জি ভাই, আমি বিষয়টি জানি। মেয়েটির জন্মনিবন্ধন ও কাগজপত্র আমার কাছেই আছে। তবে জন্মনিবন্ধন দেখতে চাইলে তিনি জানান, এখন সঙ্গে নেই, বাসায় রেখে এসেছি। এরপর বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তিনি স্থান ত্যাগ করেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একজন শিক্ষক যখন বাল্যবিবাহের মতো অপরাধে পরোক্ষ ভূমিকা রাখেন, তখন সমাজে এ ধরনের অপরাধ আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ অনুযায়ী। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি গঠন, জাতীয়, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা ও ভঙ্গের শাস্তি, কোনো বাল্যবিবাহের আয়োজন বা প্রস্তুতি দেখা গেলে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন। এই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করলে ৬ মাস কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।
বাল্যবিবাহ সম্পন্ন করলে, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বাল্যবিবাহ করলে ২ বছর কারাদণ্ড বা ১ লক্ষ টাকা জরিমানা, অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে ১ মাস আটক বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।
অভিভাবকের দায়, পিতা-মাতা বা অভিভাবক বাল্যবিবাহে অনুমতি দিলে বা বন্ধে ব্যর্থ হলে
৬ মাস থেকে ২ বছর কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে।
বিবাহ নিবন্ধকের শাস্তি, বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করলে নিবন্ধক ২ বছর কারাদণ্ড ও লাইসেন্স বাতিলের মুখোমুখি হবেন।
সমাজের প্রত্যাশা, এ ঘটনায় স্থানীয়রা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা দাবি করেছেন। তাদের মতে, শিক্ষক সমাজের আদর্শ, অথচ তিনিই যদি আইন ভঙ্গের সহযোগী হন, তবে শিক্ষার্থীরা কোন শিক্ষা নেবে।