বন্দর প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দরের আলোচিত ও কুখ্যাত মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত মতিউর রহমান জনি ওরফে “ব্ল্যাক জনি” আবারও নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে তার নাম। এবার তিনি নতুন পরিচয়ে হাজির হয়েছেন বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি পদে মনোনয়ণপত্র জমা দিয়েছেন। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন আগামী পহেলা নভেম্বর। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অভিভাবক পদে ৫জন প্রার্থী মনোনয়ণপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে মতিউর রহমান জনি ওরফে ব্ল্যাক জনির পক্ষে মনোনয়ণপত্র জমা দিয়েছেন শিপন নামে এক ব্যাক্তি।
জানা গেছে, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চরঢল্বেশরী এলাকার কুখ্যাত নৌ-ডাকাত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার একাধিক আসামি শিপন। বর্তমানে মাদক সম্রাট ব্ল্যাক জনির সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করছে শিপন। তবে নতুন করে কৌশল অবলম্বন করে মাদক সম্রাট ব্ল্যাক জনিকে নিয়ে আসছে প্রকাশ্যে। কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে অভিভাবক পদে মনোনয়ণপত্র জমা দিয়েছেন শিপন। যা নিয়ে এলাকায় নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ব্ল্যাক জনির মেয়ে সাদিয়া সুলতানা দিয়া, তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী, তার নামে অভিভাবক হিসেবে ৭ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন একাধিক মামলার আসামি শিপন। মাদক ব্যবসায়ী হয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অংশ নেয়ায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মতিউর রহমান জনি ওরফে ব্ল্যাক জনির বিরুদ্ধে মাদক, ডাকাতি ও চাঁদাবাজি সহ প্রায় ২০টি মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। অভিভাবক ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, এলাকায় যাকে এক নামে চিনেন মাদক সম্রাট ব্ল্যাক জনি। তিনি মাদক ব্যবসার মাধ্যমে তরুণ সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছেন, তার এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে প্রবেশের চেষ্টা করছে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করার জন্য। এমনকি অত্র বিদ্যালয়ে নতুন করে শিক্ষার্থীদের মাঝে মাদক তুলে দিতে কৌশল অবলম্বন করছে। তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি নৌ-ডাকাত শিপন। অভিভাবকরা আরও বলেন, মাদক সম্রাট ব্ল্যাক জনির মত এমন ব্যক্তির হাতে যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যায়, তাহলে শিক্ষার মান ও নৈতিকতা দুটোই ধ্বংস হবে। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া।
কলাগাছিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফ জানান, মতিউর রহমান জনি নামে একজন ব্যক্তি অভিভাবক পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করে শিপন নামে এক ব্যাক্তির মাধ্যমে জমা দিয়েছেন। চিহ্নিত মাদক সম্রাট, যার বিরুদ্ধে প্রায় ২০টি মত মামলা রয়েছে এমন ব্যাক্তি কিভাবে ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে মনোনয়ণ সংগ্রহ করেছে এবং জমাও দিয়েছে এ প্রসঙ্গে তিনি জানান আমি শুধু মনোনয়নপত্র জমা নিচ্ছি এছাড়া আমার কোন দায়িত্ব নেই। নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তিনি বিষয়টি ভালো জানেন এবং দেখতে পারেন। এখানে আমার কিছু করার নেই।
তিনি আরও জানান এখন পর্যন্ত ৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রমিজ উদ্দিন, রোমান মিয়া, আল মামুন, মতিউর রহমান জনি ও সাইফউদ্দিন।
নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল কাইয়ূম জানান, আইন অনুযায়ী যদি কেউ যদি দন্ড প্রাপ্ত না হয়, তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। যেহেতু আগামীকাল যাচাই-বাছাই হবে, বিষয়টি যাচাই করে দেখা হবে। এ বিষয়ে বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি দেখবে বলে জানান।