মোঃ আবু কাওছার মিঠু রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের আধুরিয়া ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার তিন ছাত্রকে বলাৎকারে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনের(২২) শাস্তির দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আধুরিয়া এলাকা অবরোধ করে রাখা হয়। গতকাল ১৯অক্টোবর রবিবার বেলা ১১টার দিকে মাদ্রাসার ছাত্র, অভিভাবক, এলাকাবাসী সড়কের উপর গাছের গুড়িঁ ও বাঁশ ফেলে অবরোধ করে রাখে। অবরোধে সড়কের উভয়দিকে ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে দূরপাল্লার যানবাহন চালক ও যাত্রীরা। খবর পেয়ে দুপুর ১টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সাইফুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভ‚মি) মো: তারিকুল আলম ও রূপগঞ্জ থানা ওসি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়।
পুলিশ জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলার আধুরিয়া ইসলামিয়া তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্রকে(১০) বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনকে(২২) গত ১৮অক্টোবর শনিবার রাত ১১টায় গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। মোহাম্মদ হোসেন কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার বাসিন্দা ও ওই মাদ্রাসার শিক্ষক। বলাৎকারের শিকার ছাত্রকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনকে গ্রেফতার দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আধুরিয়া ইসলামিয়া তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন গত ১৮অক্টোবর শনিবার সন্ধ্যায় একই মাদরাসার নূরানী শাখার এক ছাত্রকে কৌশলে বলাৎকার করেন।
বলাৎকারের শিকার শিক্ষার্থী রাতে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানায়। পরে পরিবারের সদস্যরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়ে অন্য ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পান। একপর্যায়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন শনিবারের বলাৎকারের ঘটনা সহ এর আগে অপর দুই ছাত্রকে একই কায়দায় বলাৎকারের কথা স্বীকার করেন। এসময় উত্তেজিত এলাকাবাসী শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হলে উত্তেজিত জনতা শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ব্যাপারে বলাৎকারের শিকার ছাত্রের পিতা ইয়ার আহম্মেদ বাদী হয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনকে আসামী করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম সিরাজীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নিরঞ্জন দাস বলেন, বলাৎকারের অভিযোগে শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেনকে গ্রেফতার দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বলাৎকারের শিকার ছাত্রকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোখলেছুর রহমান বলেন, পুরো ঘটনা তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত ওই মাদ্রাসায় অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বলাৎকারের শিকার হয়েছে কিনা সার্বিক বিষয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।