শামছুল হুদা, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : নান্দাইলের সাবেক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে উপজেলার ইউপি সদস্যরা। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের নান্দাইল নতুন বাজার এলাকা মানববন্ধন করে। এসময় সদ্য বিদায়ি ইউএনও’র দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার দাবি করে আধাঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।
নান্দাইলের সাবেক ইউএনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে নান্দাইলের হাট-বাজার ইজারায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতিসাধন, ব্যাংকে ডিপোজিটকৃত গাছের কোটি টাকা আত্মসাৎ, তারেরঘাট পাথর কেলেঙ্কারি, এসিল্যান্ডের দায়িত্বে থাকাকালীন ঘুষের মাধ্যমে অসংখ্য খারিজ দুর্নীতি, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে ঘুস বাণিজ্য ও অনিয়ম, ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে এডিসি/রাজস্ব তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, ইউপি সদস্য/মহিলা সদস্যদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ করা হয়।
জানা গেছে, এ বছরের ২৮ মার্চ ইউপি সদস্যরা ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে ১৩ জুলাই ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও ২৯ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন, দুদকে অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলার শেরপুর ইউনিয়ন ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ সহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা। এর আগে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা থাকাকালীন সময়ে ইউএনও সারমিনা সাত্তারের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। যা বেশ কিছু জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন- গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে নান্দাইলে সীমাহীন দুর্নীতি করেছে। গত ২২ জুন ইউএনও সারমিনা সাত্তার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে হবিগঞ্জ জেলা বদলি হয় কিন্তু পরবর্তীতে তদবির করে বদলির আদেশ প্রত্যাহার করে নান্দাইলেই থেকে যায়। এদিকে, গত ২০ অক্টোবর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে নড়াইল জেলায় বদলি করে ২৩ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক থেকে ইউএনও সারমিনা সাত্তারকে অবমুক্ত করে দেওয়া হয়। ইউএনও থাকাকালীন সময়ে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ইজারা, পাথর কেলেঙ্কারি, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ, নামজারিতে অতিরিক্ত আত্মসাৎ, ভুয়া প্রকল্প থেকে টাকা উত্তোলনসহ নানান দুর্নীতি করে।
বক্তব্যে ইউপি সদস্য মাসহুদ পারভেজ বলেন- নান্দাইলের ইতিহাসের সেরা দুর্নীতিবাজ, শুধু অনিয়ম দুর্নীতিতে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইউপি সদস্যদের সাথে অসদাচরণসহ মিথ্যা মামলার হুমকিও দিয়েছেন। দুর্নীতি দমন দুদকে অভিযোগ দিয়েছি তার দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার বিচার দাবি করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- খারুয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুস কদ্দুস মুন্সি, বাচ্চু মিয়া, শেরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহজাহানসহ আরও অনেকেই।