আসিফ জামান, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও শহরে রাতর অন্ধকারেহযরত বাবা শাহ সত্যপীর মাজার ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয় লোকজন ও ভক্তরা ওই মাজারে গেলে মাজার ভাংচুরের দৃশ্য দেখতে পান।
এরআগে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতের কোন এক সময়ে শহরের সত্যপীর ব্রীজ এলাকায় অবস্থিত ওই মাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে মাজারে আসতে থাকেন শত শত ভক্ত আশেকান। তারা মাজার ভাঙচুরের এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ঠাকুরগাঁও শহরের সত্যপীরব্রীজ এলাকায় অবস্থিত হযরত বাবা শাহ সত্যপীর মাজারটি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে দিয়ে ভক্তরা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসতো। এদিকে শুক্রবার রাতের কোন এক সময় কে বা কাহারা ওই মাজারে প্রবেশ করে এবং মাজারে অবস্থিত কবরগুলো ভাংচুর করে।
মাজারের ভক্ত আলীম হোসেন বলেন, এই মাজারটি আমার জন্মেরও আগের। কখনোই এখানে খারাপ কাজ হয়নি। মুনাফেক কিছু লোকজন রাতের অন্ধকারে মাজার ভাংচুর করে এবং মাজারের কবরগুলোও ভাংচুর করে। আমরা চাই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক
হযরত বাবা শাহ সত্যপীর মাজার কমিটির সভাপতি এনামুল হক বলেন, শতশত ভক্ত আশেকান মাজারে এসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই মাজারের ভক্তরা কখনোই কোন ধরনের খারাপ কাজ করেনি; এটা আমরা দৃঢ় ভাবে বলতে পারি। অথচ রাতের আধারে কে বা কাহারা আমাদের মাজার ভাংচুর করে এবং মাজারে অবস্থিত কবরগুলোও ভাংচুর করে।
তিনি বলেন, হযরত বাবা শাহ সত্যপীর মাজার ভাংচুর যাঁরাই করুক তাদের যেন ছাড় দেওয়া না হয়। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই- প্রশাসন অবশ্যই সঠিক ভাবে তদন্ত করবে এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনবে।
মাজার ভাংচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে বলে জানান হযরত বাবা শাহ সত্যপীর মাজার কমিটির সভাপতি এনামুল হক।
এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মো. মনির হোসেন বলেন, কে বা কাহারা মাজার ভাংচুর করেছে। তবে এখানে কোন ধরনের চুরি হয়নি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। সেই সাথে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলাম বলেন, মাজার ভাংচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখলাম এখানে মাজার ভাংচুরের সাথে মাজারের কবরগুলোও ভাংচুর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেহেতু মাজারে কোন ধরনের চুরির ঘটনা ঘটেনি এতে একটি বিষয় স্পষ্ট – মাজার ভাংচুরের ঘটনাটি ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে, আমি আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।