সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: জমিজমা নিয়ে মামলা মোকদ্দমাসহ পূর্ববিরোধের জেরে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলজ্ঞ ইউনিয়নের কুলজ্ঞ(বড়বাড়ি) গ্রামের মোঃ জালাল উদ্দিন চৌধুরীকে প্রাননাশের হুমকিসহ বাড়ির পাশে হিলুয়ার বন্দে তার পৈতিক সম্পত্তি ৮.৩০ কেদার বোরো জমিতে পানি সেচ ও চাষাবাদের সময় গ্রামের প্রতিপক্ষের প্রভাবশালী লোকজনের বাধাঁ ও জমি থেকে কাজের লোকদের তুলে দেয়াসহ মেশিনারী জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দিরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দয়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৪ জানুয়ারী সকাল ১১টায়। এই ঘটনায় গত ২৪ জানুয়ারী ঘটনার দিন বিকেলে কুলঞ্জ গ্রামের মৃত মনিরুজ্জামান চৌধুরীর ছেলে মোঃ জালাল উদ্দিন চৌধুরী বাদি হয়ে একই গ্রামের মৃত আবুল হোসেন চৌধুরীর ছেলে আবুল খয়ের চৌধুরী,মৃত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর ছেলে আছাদ চৌধুরী,লুচু মিয়ার ছেলে নাহিদ চৌধুরী,মৃত মলা উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে মিলাদ চৌধুরী এই চারজনের নাম উল্লেখ করে অঞ্জাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামী করে দিরাই থানায় লিখিত অভিযোগটি দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়েরের ৮দিন পেরিয়ে গেলে ও পুলিশ মামলাটি এফআইআর করেননি বলে বাদি অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগ দায়েরের পরের দিন গত ২৫ জানুয়ারী পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১টি চার ঘোরার পানির মেশিন (পানির পাম্প) ও ঠেলা গাড়ি উদ্ধার করলে ও বাকি জিনিসগুলো উদ্ধার করা হয়নি। অভিযোগ সূত্রে জানা যায় দীর্ঘদিন ধরে কুলজ্ঞ গ্রামে বাদির সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে গ্রামের নামাংঙ্কিত বিবাদিগণের সাথে মামলা
মোকদ্দমাসহ পূর্ববিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে গত ২৪ জানুয়ারী সকাল ১১টায় বিবাদিগণসহ অঞ্জাতমানা আরো কয়েকজন মিলে দেশীয় দাড়াঁলো অস্ত্র নিয়ে বাদির কুলজ্ঞ মৌজার হিলুয়ার বন্দে ৮.৩০ কেদার বোরো রকম জমিতে গিয়ে চারা রোপন থেকে শুরু করে কাচারিয়া বন্দে ২০ কেদার জমিতে হালচাষের সময় চাষাবাদে এবং সরকারী রাস্তায় চলাফেরা করতে বাধাঁ প্রদান,কাজের লোকজনকে ভয়ভীতি প্রদান করা হয়।
এ সময় বিবাদিগনের নেতৃত্বে আরো অজ্ঞাতনামা কযেকজন মিলে বাদির জমিতে পানি সেচের সময় ৪ ঘোরার একটি পানির মেশিন,১টা ঠেলা গাড়ি,আর এফ এল এর ২০ ফুট পাইপ,১৩ কেজি প্লাস্টিকের পাইপ কাজের লোকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মেশিনারী জিনিসগুলো জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও কাচারিয়া বন্দে জমিতে তেতৈয়া গ্রামের মিলিক মিয়ার ছেলে ড্রাইভার জিবুল মিয়া হালচাষ করার সময় আড়াই লাখ টাকা মূল্যের একটি এসি আই কোম্পানীর ২৮ লাঙ্গলের পাওয়ার টিলার নামাংঙ্কিত ৪ জন আসামীর নির্দেশে কুলজ্ঞ গ্রামের মৃত হাচু মিয়ার ছেলে ড্রাইভার রুস্তুম উল্ল্যাহ জমি থেকে টিলার তুলে নিয়ে গ্রামের সোহেল ছামস চৌধুরীর বাড়িতে রাখা হয়। ঘটনার সময় তারা হালিচারা গরু দিয়ে খাওয়াইয়া এবং পা দিয়ে সম্পূর্ণ বিনষ্ট করে দেয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বাদির মোট ৩ লাখ ২৩ হাজার টাকার মালামাল চুরি হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযোগ দায়েরের পর দিরাই থানা পুলিশ গত ২৫ জানুয়ারী ঘটনাস্থলে নিয়ে চার ঘোরার পানির মেশিন পাম্প ও ঠেলা গাড়ি উদ্ধার করা সম্ভব হলেও পুলিশ বাকি মালামালগুলো এখনো উদ্ধার করতে পারেনি এবং গত ৮দিনে ও পুলিশ মামলাটি (এফআইআর) করেনি।
এছাড়াও বিবাদিগণ পেশীশক্তির জোরে বাদির আপন ছোটভাই মিলাদ চৌধুরীর জমিতে গরু দিয়ে ধান খাওয়ানো,গাছ উফরে ফেলার ঘটনায় মিলাদ চৌধুরী বাদি হয়ে ২০২৩ সালে দন্ডবিধির ৪৪৭/৪২৭/৩৮২/৫০৬ ও ৩৪ ধারায় যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালত সুনামগঞ্জে নামাংঙ্কিত ব্যাক্তিদের আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৬১১/২০২৩ ইং। এই মামলা মোকদ্দমা থেকে শুরু হয় দ্বন্ধ। এই মামলা তুলে নিতে বাদিকে বিভিন্নভাবে হুমকি দামকী দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বাদির। মামলার বিবাদি আবুল খয়েরের চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। মামলার বাদি মোঃ জালাল উদ্দিন চৌধুরী জানান,আমাদের গ্রামের বিবাদিগণ দাঙ্গা প্রকৃতির লোকজন পেশীশক্তির জোরে আমাকে বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয় এবং মামলা তুলে না নিলে আমাকে প্রানেমারার হুমকি প্রদান করাসহ আমার বোরো জমির হালিচারা বিনষ্ট করা হয়েছে এবং জমিতে আমার কাজের লোকজন হালচাষের সময় পাওয়ার পাম্প,ঠেলা গাড়ি পাওয়ার টিলার ও পাইপসহ প্রায় তিন লাখ টাকার উপরে জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। আমি দ্রুত বিবাদিগণকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য বর্তমান সরকার ও পুলিশ সুপারের নিকট দাবী জানাই।
এ ব্যাপারে দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোঃ আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এই গ্রামে বাদি তারা দুইটি পরিবার একদিকে আর পুরো গ্রাম একদিকে। কাজেই অভিযোগটি যাচাই বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।