স্টাফ রিপোর্টার: বহুল আলোচিত ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে এই প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তার কোন হদিস নেই। তেমনি তার সহযোগী হিসেবে জায়গা দখল, চাঁদাবাজি সহ নানান অপকর্মের হোতা ভূমিদস্যু মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ শাহ জাহান ও রাসেল মিয়া বাহিনীরও কোন হদিস নেইা। এরা আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় পলাতক ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের সহযোগী হিসেবে মানুষকে জিম্মি করে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। তেমনি গাজীপুরের কালীগঞ্জেও তাদের দাপটে আতঙ্কে ছিল সাধারণ মানুষ। এরা সবাই গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা। জানা গেছে, এক সময়ে গাজীপুরে এসপি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ।
টানা চার বছর থাকাকালীন সময়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেন মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ শাহ জাহান ও রাসেল মিয়া। সেই সুবাধে পুরো গাজীপুরে জায়গা দখল, চাঁদাবাজি সহ নানান অপরাদ কর্মকান্ড চালিয়ে তারা। তাদের হাত থেকে অনেক মানুষ নিপিড়ীত হয়েছে এবং মানুষকে জিম্মি করে তাদের স্বার্থ হাসিল করতেন। গাজীপুর সহ বিভিন্ন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও তৎকালীন ডিবি হারুনের সহযোগী হিসেবে কাজ করায় তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতেন না। টাকার জন্য এই বাহিনী দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা এমন কিছু নেই যা তা করেনি। সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও বোকা বানিয়েছেন এবং অনেকের চাকুরিও খেয়েছেন তিনি। এছাড়াও ৩শ ফিট এলাকায় জায়গা, জমি সহ প্লট বিক্রি করতে গেলেও এই বাহিনীকে চাঁদা দিয়ে কাজ করতে হতো।
এসব কিছু সবই সম্ভব হয়েছে পুলিশ কর্মকর্তা ডিবি হারুনের জন্য। শুধু গাজীপুরে নয় তাদের দিয়ে ঢাকা সহ আশেপাশের এলাকাও অপর্কম করিয়েছেন। ২০২২ সালে বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের সহযোগী মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ শাহ জাহান ও রাসেল মিয়া বাহিনী গাজীপুরের কালিগঞ্জ থানাধীন পূর্বাচল ১৬নং সেক্টরে প্লট বাউন্ডারী নির্মাণের কাজে বাধা দিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদাদাবি করেন। দাবিকৃত ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় প্লটের বাউন্ডারী ভেঙে গুড়িয়ে দেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের সহযোগীরা। এই ঘটনায় দবির উদ্দিন এর মেয়ে শাহ ফারহান নিশাত বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানা একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। অভিযুক্ত সিরাজুর ইসলাম গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার কালিকুটি এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদ এর ছেলে, একই থানা এলাকার ছানারুল ইসলাম এর ছেলে রাসেল ও বাসাবাসি এলাকার ছবদর আলী নুন্দু ছেলে শাহ জাহান।
থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের সহযোগীরা তাঁর ভয় দেখিয়ে নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকেন অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী চাঁদাবাজির অভিযোগে ২০২২ সালের ৭ মার্চ কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৩। এদিকে ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা হারুন বাহিনীর সহযোগীদের নামে মামলা দায়ের করেও বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে প্রথম থেকেই পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের সহযোগী হিসেবেও গাজীপুর, ঢাকায় তাঁর এই বাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। ৫ আগস্টের পূবেও ডিবি হারুনের সহযোগীতায় বিভিন্ন মানুষের নামেও একের পর মামলা করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর প্রভাবশালী এই পুলিশ কর্মতর্কা সহ তাঁর বাহিনী সহযোগী মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ শাহ জাহান ও রাসেল মিয়া বাহিনী কিছু দিন পলাতক থাকলেও পরবর্তীতে প্রকাশ্যে এসে বিএনপিতে পূর্নবাসনে চেষ্টা করে যাচ্ছে তারা। বিশেষ করে এই বাহিনী যখন যে দল ক্ষমতায় আসে তাদের হয়েও কাজ করবে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। অপর দিকে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের সহযোগী মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ শাহ জাহান ও রাসেল মিয়া সহ তাঁর বাহিনীকে গ্রেফতার করলে বেড়িয়ে আসবে এই পুলিশ কর্মকর্তা হারুনের গোপন নথিপত্র সহ তাদের অপকর্মের নানান কর্মকান্ড।