নিজস্ব সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে ফ্যাসিষ্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীণ আওয়ামী দোসররা নাসিক ৮নং ওয়ার্ডে পাঠানটুলি কবরস্থানের পাশে একটি পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে মোঃ সানমুুন (৩২) নামে এক যুবককের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করেছে।
গত ২৪ জুলাই এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ্য করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযুক্তরা হলেন- বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর নাসিক ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা (৫৫) পিতা মৃত অজ্ঞাত, মোঃ ইয়াসিন (৬০) পিতা মৃত অজ্ঞাত সাং পাঠানটুলি, কুশন (৪০) পিতা মোঃ মোবারক সাং এনায়েত নগর, মোঃ জনি (৩০) পিতা মোঃ ইয়াসিন, মোঃ ইয়াসিন (৫৫) পিতা অজ্ঞাত।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়- ২০২৪ সালের ২৪ জুলাই আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে বাদীর মৎস্য খামারে উক্ত অভিযুক্তরা জোড়পূর্বক মৎস শিকার করতে থাকলে, বাদী সংবাদ পেয়ে বিবাদীদের মৎস ধরতে দেখলে বাঁধা দিয়ে বাসায় আসার পথে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন নতুন আইলপাড়া ভোকেশনাল স্কুলের পিছনের রাস্তায় পৌঁছালে উক্ত বিবাদীগণ সহ আরও অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন বেআইনী জনতাবদ্ধে দেশীয় তৈরী ধারালো দা, ছোরা, লোহার রড, কাঠের লাঠি ও এসএস পাইপ সহ বাদীর পথ রোধ করিয়া ১নং বিবাদীর নির্দেশে সকল বিবাদীগণ বাদী সানমুনকে এলোপাথারীভাবে আঘাতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা-ফুলা জখম করে।
৩নং বিবাদী পুশন (৪০) তাহার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে বাদীর মাথায় হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করলে, মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম করে। ভুক্তভোগীর ডাক চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে ২নং বিবাদী মোঃ ইয়াসিন (৬০) বাদীর প্যান্টের পকেটে থাকা নগদ ১৭,৮০০ টাকা নিয়ে সকল বিবাদীগণ ভুক্তভোগী ও তার পরিবারের লোকজনদের সময় সুযোগ মত পেলেই খুন করে লাশ ঘুম করার হুমকী দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন, আত্মীয় স্বজন সংবাদ পাইয়া ঘটনাস্থলে এসে বাদীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী সানমুন জানান- আমার বাবা অনেক বছর যাবৎ এ-ই পুকুরে মৎস চাষ করে আসছেন। বিগত ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোসর নাসিক ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পুকুর দখল করে, মাছ ধরে নিচ্ছে। আমি জানতে পেয়ে তাদের বাঁধা দিলে, কোন কাজ না হওয়ায় আমি বাড়ির দিকে আসার সময় কাউন্সিলরের নির্দেশে তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে রক্তাক্ত জখম করে। আমার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আমাকে মেরে লাশ গুম করে ফেলার হুমকী দিয়ে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়।
এরপর সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। থানায় অভিযোগ করেছি শুনে, সেদিন রাতেই কাউন্সিলর রুহুল সহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার বাড়িতে হামলা চালালে বাড়ির গেইট ও জানালা থাইগ্রাস ভাঙচুর করে। অভিযোগ না তুললে আমাকে মেরে লাশ গুম করে ফেলবে ও পরিবারকে ক্ষতি করবে বলে হুমকী দিয়ে চলে যায়। বারবার ফোন করার পরও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কোন সহযোগিতা না পেয়ে গত ২৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর এ-ই সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা এবং এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আরও একটি অভিযোগ দায়ের করি।
এরপর ছত্র-আন্দোলনে ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সহ তার এ-ই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। বিগত ৬-৭ মাস পর রুহুল আমিন দেশের বাহিরে থাকলেও তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা নামধারী বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় পূণরায় এলাকায় ফিরে আমার মৎস খামার তাদের দখলে নিয়ে সব মাছ ধরে নিয়ে যায় এবং পুকুর নিয়ে কোন বাড়াবাড়ি করলে, আমাকে ও আমার পরিবারকে ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলা সহ বিভিন্নভাবে হুমকী দিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় আমি আমার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।