কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে বেল্লাল নামের এক জেলের জালে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির একটি সজারু মাছ। ১৭ আগস্ট (রোববার) সন্ধ্যায় মাছটি আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে নিয়ে আসলে লোকজনের মধ্যে শোরগোল শুরু হয়। মাছটিকে এক নজর দেখতে ভিড় লেগে যায়। শুক্রবার পায়রা বন্দরের শেষ বয়ার কাছে অন্য মাছের সঙ্গেই এই মাছটি পেয়েছেন। মাছটি সন্ধ্যায় ইলিশের মাছের সাথে আলীপুরে মৎস্য আড়ৎতের কামাল ফিসে নিয়ে আসলে মাছটি কেউ ক্রয় না করলে আড়তে ফেলে রাখে যান। মাছটির সারা শরীরে ছোটো ছোটো তিলের মতো চিহ্ন ও কাটা রয়েছে। মাছটির ওজন প্রায় সাড়ে তিন কেজি।
মাছটি শরীরের তুলনায় লেজ অনেক চিকন। কামাল ফিসের স্বত্বাধিকারী কামাল হোসেন বলেন, ‘মাছটা আমি জীবনে প্রথম দেখলাম। দেখতে কেমন যেন ফোলা আর কাঁটাওয়ালা। মাছটি দেখে ভয়ই পেয়ে গেছিলাম প্রথমে। স্থানীয় ব্যাবসায়ী মনিরুজ্জামান হাওলাদার বলেন, ‘এই মাছ খাওয়া যায় কিনা তা আমরা জানি না। তবে দেখতে খুবই বিশ্রী আর অচেনা। অনেকে বলছে এটা নাকি বিরল প্রজাতির মাছ।’
ওয়ার্ল্ডফিশ ইকোফিশ এক্টিভিটি-২ প্রকল্পের বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার রহমান বলেন, মাছটি পাফারফিশ বা ফুগু মাছ নামে পরিচিত। বাংলায় অনেকে একে ফোলকা বা কাঁটাওয়ালা ফোলকা মাছ বলে থাকে। বাংলাদেশ উপকূলীয় অঞ্চলে ও গভীর সাগরে এই মাছ মাঝে মাঝে জেলেদের জালে ধরা পড়ে।
এদের শরীরে একধরণের টেট্রোডোটক্সিন নামক বিষ থাকে, যা অত্যন্ত মারাত্মক। এই বিষ এতটাই শক্তিশালী যে মানুষের জন্য মারাত্মক প্রাণঘাতী হতে পারে।এ মাছ খাওয়া উচিত নয়। রান্না করেও বিষ দূর করা যায় না। কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা মাছটি “পটকা মাছ” এরা নিজেদের শরীরকে ফুলিয়ে বড় করতে পারে এবং শরীরে কাঁটাযুক্ত হওয়ার কারণে শিকারীর হাত থেকে আত্মরক্ষা করে। বাংলাতে এই মাছ ‘সজারু মাছ’ বা ‘তিলক সজারু পটকা’ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে এ মাছের বেশ কয়েকটি প্রজাতি পাওয়া যায়।