স্টাফ রিপোর্টার: বধিরদের নামে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ফুসে উঠছে বধিররা। জাতীয় বধির সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ একজন সুস্থ সবল ব্যক্তি হয়ে বধিরদের ভাষা না বুঝেও তাদের সাথে প্রতারণা করে সভাপতির পদটি বাগিয়ে নিয়ে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বধিরদের নামে আসা সাহায্য সহযোগীতার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কালামকে দীর্ঘসময় আটক রাখার ঘটনাও ঘটিয়ে ফেলেছে বধিররা। শুধু মারধর করার বাকি ছিল। এ রকম একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
জানা যায়, বিএনপি থেকে বহিস্কৃত এবং তৃনমূল বিএনপির মহাসচিব এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের সহচর আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘদিন রাজনৈতিক মাঠে তৈমূরের নাম ব্যবহার করে অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল। ৫ই আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আবুল কালাম নিজের ভোল্ট পাল্টে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে সামাজিক প্রতিষ্ঠানও দখলে নেবার চেষ্টা করে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রকল্প সমন্বয় পরিষদের কমিটি ভেঙে চুরে এবং ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে নিজ বন্ধুদের গড়া কমিটিটি রাজনৈতিক ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দখলে নেবার চেষ্টা করে এবং প্রকল্প সমন্বয় পরিষদের পুরাতন সদস্যদের বাদ দিয়ে নিজের মতো করে অন্য সংগঠনের নতুনদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করায়। যাতে তার ভোট পেতে সাহায্য করে।
এর মধ্যে প্রকল্প সমন্বয় পরিষদের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের হুমকী ধামকী দিয়ে যাচ্ছে। তাকে ভোট না দিলে রাজনৈতিক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের মামলা দিয়ে হয়রানী করবে বলেও ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। এর মধ্যেই তার আসল চেহারা বেরিয়ে আসে। বিভিন্ন প্রতিবন্ধীদের এবং বধিরদের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছে। সদর উপজেলাধীন ৩০ লয়েল ট্যাংক রোড নারায়ণগঞ্জ বধির সংঘের আসবাবপত্র ক্রয় বাবদ নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ থেকে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পায়। অথচ এই টাকার বিষয়ে বধির সংস্থার কেউ জানতো না।
তার মধ্যে বধিরদের স্থায়ী জায়গায় অফিস করে দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক আবুল কালাম আজাদ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্প সমন্বয় পরিষদের নারী সদস্য জানিয়েছেন কালাম একটি চরিত্রহীন পুরুষ। এই লম্পট কীভাবে মানুষের সেবা করবে। তিনি নিজেই সব লুটেপুটে খাবে। দিন নাই রাত নাই যখন তখন নারীদের ফোন দিয়ে বিরক্ত করেন। এছাড়াও কে কোথায় কি করলো সেটারও কৈফিয়ত নিতে চায় টাউট আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের ডিডি আসাদুজ্জামানকে প্রায় সময়ই হুমকীর মধ্যে রাখে এবং শহর সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিসার সাইফুল ইসলাম এক কথায় কালামের ভয়ে জিম্মি অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে আধিপত্য বিস্তার করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির ইমেজ এবং কাজ করার পরিবেশ নষ্ট এবং সেই সাথে বিভাজনও সৃষ্টি করছে। ইতি মধ্যে বধিররা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে কালামের দূর্নীতির বিষয়টি জানিয়েছে এবং সম্প্রতি নিজ কার্যালয়ে কালামকে আটক করে প্রতিবাদের ভাষায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে কালাম ১৫ দিন সময় চেয়ে নেয় এবং তিনি সভাপতি পদে থাকবেন না বলেও জানিয়েছেন। তবে বধিররা অনেকেই তাকে মারধর করার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। বধিররা জানায় আবুল কালাম আজাদ একজন প্রতারক ও চাঁদাবাজ। মানুষকে অহেতুক হুমকী ধামকী দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে কাজ হাসিল করে নেয়। এই ধরনের অমানুষকে আমরা চাই না। আমরা কালামের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।