সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীর তীরের মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে ট্রাক চালকসহ দুই ব্যক্তিকে
আটক করেছে যৌথবাহিনী। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বেলা ২টায়। এ ঘটনায় মাটি খেকো কথিত সাংবাদিক সাজ্জাদ মাহমুদ মনিরসহ চার ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে প্রশাসনের হাতে। সে সাংবাদিকের লেবাস পরিধান করে এলাকায় একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে নিজে গডফাদার সেজেছে।
জানা যায়, হেমন্তে সুরমা নদীর তীরে জেগে উঠে চর। এই চরের মাটির দিকে টার্গেট করে মাটি খেকোরা। গেল কয়েকদিন ধরে এখান থেকে মাটি অবৈধ ভাবে বিক্রি করে আসছিল কথিত সাংবাদিক নামধারী সাজ্জাদ মাহমুদ মনির সিন্ডিকেট। প্রতিদিনের ন্যায় শুক্রবার সকাল থেকে সুরমা নদীর ছাতক লাফার্জ ফেরিঘাটের দক্ষিন বাগবাড়ি এলাকায় মাটি কেটে ট্রাক যোগে অবৈধ ভাবে বিক্রি করা হচ্ছিল।
এমন সংবাদ পেয়ে ছাতক আর্মি ক্যাম্পের অধিনায়কের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বৈধ কোন প্রমান দেখাতে পারেনি। বিষয়টি অবহিত করা হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু নাছের। খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় পৌরসভার বাশখালা গ্রামের জুবেদ আলীর ছেলে আতাউর রহমান (৩৮) ও উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের মৃত আবদুল হেকিমের ছেলে ট্রাক চালক মখলিছ মিয়া (৪০) কে। ট্রাকে ভর্তি মাটি পুনরায় কর্তন স্থানে ফেলার পর ট্রাকটিও আটক করে যৌথবাহিনী।
এদিকে, গ্রেফতারকৃত আতাউর রহমান যৌথ বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ্যে জানিয়েছে, লাফার্জ হোলসিমের ফেরি চালক আবুল বশরের ছেলে কথিত সাংবাদিক সাজ্জাদ মাহমুদ মনিরের কাছ থেকে তারা সুরমা নদীর তীরের মাটি টাকার বিনিময়ে ক্রয় করেছেন। এর আগেও এখান থেকে তার কাছ থেকে মাটি ক্রয় করে নিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে আতাউর রহমান আরও জানায়, সাজ্জাদ মনির নামের ওই সাংবাদিক তাদেরকে বলেছে মাটি বিক্রির টাকা তারা চারজনে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। অন্যরা হলেন, জসিম উদ্দিন, নোমান ইমদাদ কানন ও খায়রুদ্দিন।সূত্রে জানা গেছে এই সাজ্জাদ মনির নামের কথিত সাংবাদিক নামধারী একজন ইয়াবা সেবনকারী। সে মাদকসহ সকল অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত।
ইয়াবা সেবনের তার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি প্রচার হয়েছিল। এছাড়া লাফার্জ ফেরিঘাট সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সরকারী বাসায় বসবাস করার সুযোগে এই কথিত সাংবাদিক সাজ্জাদ মাহমুদ মনির সরকারী জায়গা থেকে অবৈধ ভাবে মাটি, পাথর, বালু উত্তোলন করে এবং সরকারী অসংখ্য গাছ- গাছালি বিক্রি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। অভিযোগ উঠেছে তাকে সহযোগিতা করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র ও সওজ বিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তারা। লাফার্জের ফেরি চলাচল বন্ধ হলেও সরকারী বাসায় এখনও সে এবং তার পরিবার বসবাস করে আসছে। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে।ছাতকে সুরমার চর থেকে মাটি বিক্রি করছেন কথিত সাংবাদিক সাজ্জাদ মনির: ট্রাকসহ দুই
ব্যক্তিকে আটক করল যৌথ বাহিনী