মোহাম্মদ আবুল হাশেম বান্দরবান প্রতিনিধি:বান্দরবানের লামা উপজেলায় বন্ধ হচ্ছে না খাল, ছড়া ও নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন। স্থানীয় অসাধু কিছু বালু সিন্ডিকেট চক্র অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিবছরই ভাঙনের মুখে পড়ছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট, কালভার্ট ও ব্রিজসহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল। উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে সংঘবদ্ধ চক্র বালু মহাল নীতিমালার তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। ইউনিয়নের লাটের ঘাট ও ছাগল্লা ঝিরি এলাকার বাগাইছড়ি খালের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধ ভাবে তোলা হচ্ছে বালু। এতে করে খালের দু’পাড় ভেঙ্গে নষ্ট হচ্ছে বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, পাহাড় ও বসতবাড়ি। ফাঁসিয়াখালি কিছু প্রভাবশালী লোকজন এই পরিবেশ ধ্বংসের সাথে জড়িত বলে জানায় স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, এখনো আওয়ামী লীগের দলীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন এই পরিবেশ ধ্বংসের সাথে জড়িত। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। উল্টো তাদেরকে পরোক্ষ সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা যায়, লামা উপজেলায় ফাঁসিয়াখালি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ নেতা মহরম আলী, ছাত্রলীগ নেতা শাহারিয়া, যুবলীগ নেতা আলা উদ্দিন, আব্দুস শক্কুর, আলতাস, রমজান আলী, আবুল হোসেন, জসিম ড্রাইভার, কালু ও একই এলাকার সাবেক মেম্বার গোলাম কাদেরসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী একাদিক ব্যক্তি বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এই উপজেলায় সরকারিভাবে কোন বালু মহল নেই। কিন্তু থেমে নেই অবৈধ বালি উত্তোলন। ফাঁসিয়াখালি ইউনিয়নের বাগাইছড়ি খাল থেকে স্যালোমেশিন দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামত এ মাটি-বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এছাড়া ব্যাপক বালু তোলার কারণে খালের দু’পাশেসহ অসংখ্য পাহাড় ও এলাকার অর্ধশত ব্রিজ, কালভার্ট ও কয়েকটি রাস্তাঘাট বিলীনের পথে। খাল থেকে স্যালো মেশিন দিয়েও এ কাজ চালানো হচ্ছে। ফলে কৃষি জমির পরিমাণও দিনদিন কমে আসছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
উপজেলার ফাঁসিয়াখালি ইউনিয়নের বাগাইছড়ি খাল থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন করে বিশাল স্তুপ করা হয়েছে। আবার কিছু কিছু পয়েন্টে ৬-৭ জন শ্রমিক দিয়ে অবৈধভাবে সরাসরি ট্রাকের বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। ব্যাপক বালু তোলার কারণে খালের দু’পাশেসহ অসংখ্য পাহাড় ও এলাকার অর্ধশত ব্রিজ, কালভার্ট ও কয়েকটি রাস্তাঘাট বিলীনের পথে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসাইন মামুন বলেন, আগে শুধু আওয়ামী লীগের লোকজন অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত ছিল, আর এখন বিএনপি আওয়ামী লীগ মিলে এই অবৈধ বালু উত্তোলন করে। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে কিছুদিন আগে বাগাইছড়ি থেকে ছাগল্লা ঝিরি এলাকায় যাতায়েত করার জন্য বাগাইছড়ি খালের উপর র্নিমিত বেইলী সেতু ভেঙ্গে কিছুই নাই। ফলে এখন সাধারন মানুষের যাতায়েতের খুব কষ্ট হচ্ছে।
বালু উত্তোলনকারী আবুল হোসেন বলেন, এখন তো ব্যাবসা খুব কম মাঝেমাঝে কিছু গাড়ি হয়। অনুমতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে বালু তোলার অনুমতি কারো থেকে নাই, আমার থেকেও নাই।
অবৈধ বালু উত্তোলনে সাথে জড়িত আব্দুস শুক্কুর বলেন, আমরা সবাইকে ম্যানেজ করে কয়েক গাড়ি বালু উত্তোলন করি। এখন আগের মত ব্যাবসা নাই।
এই বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ: দা:) রুপায়ন দেব বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা তাদের বিরুদ্বে অভিযান পরিচালনা করবো এবং সবাকে আইনের আওতাই আনা হবে।