সঞ্জয় ব্যানার্জী, পটুয়াখালী প্রতিনিধি।।মহান বিজয় দিবসের ছুটিকে ঘিরে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বিরল সৌন্দর্যের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পর্যটক-দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। গত রবিবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সি হাজার হাজার ভ্রমণপিপাসু মানুষ কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে এসে ভিড় জমায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার বিকাল পর্যন্ত পর্যটকদের পদভারে মুখর ছিল সমুদ্রসৈকত এলাকা।
আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা সমুদ্রের ঠাণ্ডা পানিতে গোসলসহ হই হুল্লোড়ে মেতে ওঠে। ওয়াটার বাইক ও স্পিডবোর্ডে সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোসহ জেলেদের মাছধরা উপভোগ করেছেন। আবার কেউ কেউ বেঞ্চিতে বসে সমুদ্র ও সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন শুনে পুলকিত হয়েছেন। কেউবা আবার সেফি তুলে কিংবা ফটোগ্রাফারের ক্যামেরাবন্দি হয়ে ভ্রমণের স্মৃতি ধরে রাখছেন। আগতরা কুয়াকাটার কুয়া, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার, বাখাইন পল্লী, লাল কাকড়ার চর, গঙ্গামতি লেক, লেম্বুর বন, সুন্দর বনের পূর্বাংশ ফাতরার বন, ঝাউবাগানসহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়িয়েছেন।
আবাসিক হোটেলগুলোতেও আশানুরূপ বুকিং রয়েছে। খাবার হোটেল ও ঝিনুক শামুকের-দোকানে কেনাকাটার ধুম পড়ে যায়। এছাড়া আগত পর্যটক দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা-পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর ছিল। কোনো ধরনের অপ্রতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। ঢাকা থেকে আগত পর্যটক সাইফুল্লাহ বলেন, সকালে তীব্র কুয়াশার কারণে সূর্যোদয় দেখতে না পেলেও দর্শনীয় স্পটগুলোতে ঘুরী হয়েছে। সমুদ্রের পানিতে গোসল করাসহ অনেক আনন্দ উপভোগ করলাম। বিজয় দিবসের ছুটিতে অনেক মানুষ এসেছে। প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা দেখে বেশ ভালো লেগেছে।
আবাসিক হোটেল সৈকতের জেনারেল ম্যানেজার আফজাল গাজী জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে আমাদের হোটেল শতভাগ বুকিং রয়েছে। এভাবে আরো বেশ কয়েকদিন থাকবে। হোটেল মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ফরাজি বলেন, অন এভারেজে ৭০ ভাগ বুকিং রয়েছে। আশা করছি, এখন থেকে আগামী কয়েক মাস প্রতিনিয়ত এভাবেই পর্যটকের সমাগম থাকবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান জানান, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পর্যটকের বাড়তি আগমনকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দর্শনীয় স্পটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ টহল অব্যাহত রয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি থানা-পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নজর রাখছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।