বন্দর প্রতিনিধিঃ- বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আইন-কানুন নিয়মনীতি অনুসরণ না করে সরকারী নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙুগুলী দেখিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত স্কুলের সভাপতির পদ দখল করে রেখেছে বন্দর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। স্থানীয় ও অভিভাবকদের অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্যতম এ বিদ্যালয়টি দীর্ঘকাল ধরে নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন স্থানীয় উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল। তিনি টানা ১৬ বছর ধরে সভাপতির পদ দখল করে আছেন। এ পদ দখল করে তিনি তার এক ভাই দাতা সদস্য, ভাগিনা অভিভাবক সদস্য, বোন অভিভাবক সদস্য, তার বন্ধুর ভাই অভিভাবক সদস্য পদে রেখেছেন। অভিযোগ রয়েছে, নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা সায়মা খানমের যোগসাজশে সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙগুলি দেখিয়ে এবং নিজের লোকদের মনগড়া বিনা ভোটে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বানিয়ে স্কুলকে একটি পরিবারতন্ত্র করে রেখেছে। এ ছাড়া স্কুলে নিয়োগ নিয়ে চরম দুনীর্তির অভিযোগ রয়েছেও তাদের বিরুদ্ধে। তার ভাতিজা বৌকে নিয়োগ দেয়ার জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষায় তার ভাতিজা বৌ ৫ম স্থান অধিকার করে চাকুরি পেয়ে যায় আর উত্তির্নরা চাকুরি থেকে বঞ্চিত হয়। পরবর্তিতে অফিস সহকারী নিয়োগের পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারিকে চাকুরি না দিয়ে নিয়োগ বানিজ্যে অকৃতকার্য লোককে চাকুরি দেয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সেই সাথে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১২ ফেব্রুয়ারি। আর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ১ মাস পূর্বে শেষ করতে হয়। কিন্তু স্কুলে নির্বাচন না দিয়ে এডহক কমিটির পায়তারা করছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বেতনের জন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হল থেকে খাতা ছিনিয়ে নিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। একাধিক অভিভাবক জানান, স্কুলে এসে কোন অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের সাথে অশালিন আচরন করা হয় বলে অভিযোগ করেন। বন্দর উপজেলায় ২২টি উচ্চ ম্যাধমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ১৮ তমে নেমে এসেছে। এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিরা সার্বক্ষনিক আতঙ্কে থাকেন। তাদের সাথে খারাপ আচরনসহ নানা অনিয়ম করে তাদের সাথে। কেহ প্রতিবাদ করতে চাইলে খেতে হয় শোকজ ও হতে হয় লাঞ্ছিত। বন্দর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাইয়ূম এর কাছে স্কুল নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্কুলের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ১ মাস পূর্বেই নির্বাচন শেষ করতে হবে। এছাড়া এডহক কমিটি করলেও ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন করে ফেলার বিধান রয়েছে। স্কুলের ম্যনেজিং কমিটির সদস্য হেলাল মিয়া জানান, স্কুলে নির্বাচন দেয়ার জন্য বহুবার বলেছি কিন্তু স্কুলের চেয়ারম্যান নির্বাচন দিচ্ছে না, কি কারণ তাও জানিনা, নির্বাচনের পরিবেশ আছে কেন তিনি নির্বাচন দিচ্ছে না তা তিনিই বলতে পারবেন। অবিভাবক সদস্য খোকন জানান, আমরা নির্বাচনের জন্য বারবার বলেছি কিন্তু স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষিকা স্কুলটাকে জিম্মি করে রেখেছে, আমাদের কথা কোন দাম নেই, তাদের যা ইচ্ছা তাই করছে, এখন তারা এডহক কমিটি করার পায়তারা করছে। অভিভাবক সদস্য ফেরদৌস ওয়াহিদ সুমন জানান, আমি বুঝি না কেন একজনই দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত সভাপতির পদ আকরে রেখেছেন সাবেক উপজেলা মেয়ারম্যান মুকুল, বারবার তিনিই সভাপতি হন, শুধু তাই নয় এডহক কমিটিরও তিনি আহবায়ক হন, স্কুলের মান উন্নয়নে তার কোন মাথা ব্যথা নেই, এ স্কুলে ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কোন ভর্তি বা বেতনের রিসিট বই ছিলো না, ব্যাপক অনিয়ম চলছে এ বিদ্যালয়ে, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক কোন অভিভাবক সদ্যসের মতামত নেন না, তাদের ইচ্ছামত স্কুল পরিচালনা করছে, আমি এমপি সেলিম ওসমান সাহেবের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এ ব্যপারে বিদ্যালয়ের সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল বলেন, জাতীয় নির্বাচনের কারণে উপজেলা থেকে কোন প্রতিনিধি দিতে না পারায় এমপির নির্দেশে এডহক কমিটি করা হয়েছে। এদিকে স্কুলের পাশবার্তি হাজী সিরাজ উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে একই সময় নির্বাচন হচ্ছে কিন্তু নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নির্বাচন না দিয়ে স্কুলকে কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে বলে একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করেন।